ডিলমেকার কিংবা পিসমেকার, নিজের উপাধির প্রতি সুবিচার করতে কোনো পন্থাই বাদ রাখছেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প। ১২ দিনের সংঘাত শেষে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে চলছে যুদ্ধবিরতি। নিজেকেই যার কৃতিত্ব দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তেহরানে হামলায় মাধ্যমে জয় করেছেন ইসরাইলিদের মন। এবার চলছে অপর পক্ষকে সন্তুষ্টের চেষ্টা।
ইরানে একটি বেসামরিক পরমাণু প্রকল্প গড়ে তুলতে ৩ হাজার কোটি ডলার সহায়তা দেয়ার বিষয়ে গোপনে আলোচনা করছে মার্কিন প্রশাসন। পাশাপাশি তালিকায় রয়েছে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও দেশটির জব্দকৃত ৬০০ কোটি ডলার অর্থছাড়ের প্রসঙ্গ।
পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরানকে আলোচনার টেবিলে ফেরাতেই যুক্তরাষ্ট্রের এই তৎপরতা। মার্কিন প্রশাসনের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার বরাতে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করে হইচই ফেলে দিয়েছে সিএনএন ও এনবিসি নিউজ।
যদিও প্রতিবেদন দুটিকে অস্বীকার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের দাবি, এমন জঘন্য পরিকল্পনার কথা কখনো শোনেননি তিনি। হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে প্রেসিডেন্ট জানান, ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয়ের মিথ্যা দাবি তোলার মাধ্যমে অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন আয়াতুল্লাহ খামেনি। তাই ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিলের পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত করছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আয়াতুল্লাহ তার বিবৃতিতে জানিয়েছেন তারা যুদ্ধে জয় লাভ করেছেন। তবে আমি বলেছি, আপনার ওপর অগণিত মানুষের বিশ্বাস আছে। আপনাকে সবাই সম্মান করে। আপনার সত্য বলা উচিত।’
মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, উদ্বেগজনক হারে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা হলে আবারও ইরানে হামলা চালাবে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি ইরানের পরমাণু স্থাপনা থেকে ইউরেনিয়াম সরিয়ে ফেলার দাবিকেও মিথ্যা বলে আখ্যা দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীর প্রশ্ন করে বলেন, গোয়েন্দা তথ্যে যদি উল্লেখ করা হয়, উদ্বেগজনক হারে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করতে পারে, সেক্ষেত্রে কী আপনারা দেশটিতে আবারও বোমা হামলা চালানোর পরিকল্পনা করবেন?
উত্তরে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘অবশ্যই। কোনো প্রশ্ন ছাড়াই অবশ্যই আমরা বোমা বর্ষণ করবো। অবিশ্বাস্য পরিণতি হবে।’
চলমান সংকটের মধ্যেও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার বিষয়ে ছাড় না দেয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে তেহরান। পাশাপাশি পরমাণু পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে চুক্তি চাইলে আয়াতুল্লাহ খামেনির প্রতি অসম্মানজনক সুর বন্ধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন আব্বাস আরাঘচি।
এক এক্সবার্তায় ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন, এমন আচরণের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার লাখো সমর্থকের মনে কষ্ট দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এদিকে কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়া ইরানে সামরিক শক্তি প্রয়োগের বিষয়ে ট্রাম্পের ক্ষমতা খর্ব করতে শুক্রবার সিনেটে ভোটাভুটি হয়েছে। যদিও সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে ব্যর্থতার মুখ দেখেছে প্রস্তাবটি।