এক রাতের ভারী বৃষ্টিতে পাল্টে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের গুয়াডালিপে নদীর গতিপ্রকৃতি। গেল এক মাস ধরে টানা বৃষ্টি হলেও স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতভর বর্ষণে বিপদসীমা অতিক্রম করে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন কার কাউন্টির পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা।
আকস্মিক বন্যা কবলিত কার কাউন্টিতে গেল রাতে ১০ ইঞ্চি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া দপ্তর। এখনও পর্যন্ত যতজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তারা প্রত্যেকেই কার কাউন্টির বাসিন্দা ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছে টেক্সাস শেরিফ ডিপার্টমেন্ট।
এছাড়াও কার কাউন্টির একটি রিভারসাইডে ক্যাম্প করতে আসা বেশ কয়েকজন কন্যা শিশুর হদিস মিলছে না বলে জানিয়েছে টেক্সাস কর্তৃপক্ষ। গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প মিসটিকে অংশ নেয়া এই শিশুদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে ওয়াইল্ড লাইফ ডিপার্টমেন্টের ওয়ার্ডেনসহ রেঞ্জারদের কয়েকটি দল। এছাড়া, বন্যা কবলিত অঞ্চল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে আড়াইশ’ স্থানীয় বাসিন্দাকে। যে সব এলাকার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে সেখানে সম্পন্ন সামরিক যানের সহায়তায় চলছে উদ্ধার অভিযান।
মার্কিন আবহাওয়া দপ্তর আরো বলছে, বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ও মধ্য টেক্সাসের বেশ কিছু এলাকায় ৪ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর জেরে একই সঙ্গে বেশ কয়েকটি এলাকায় আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়- এমন প্রেক্ষাপটে গোটা রাজ্য আপদকালীন জরুরি অবস্থা জারি করেছেন টেক্সাস গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট। হতাহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে এ ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আশ্বাস দিয়েছেন ফেডারেল সহায়তারও।
এছাড়া স্থানীয় সময় শুক্রবার টেক্সাসের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ঝড়ের পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অফিস। তাদের আশঙ্কা, অব্যাহত ভারি বৃষ্টির পাশাপাশি ঝড় আঘাত হানলে ব্যাহত হতে পারে উদ্ধার অভিযান।
এদিকে ভারতের হিমাচল প্রদেশে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে প্রাণহানি বাড়ছে হু হু করে। এখনও নিখোঁজ প্রায় অর্ধশত বাসিন্দা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে থুনাগ, বাগসায়েদ ও মান্ডি অঞ্চল। দুই সপ্তাহে রাজ্যটিতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছে ৭শ কোটি রুপি। রাজ্যের অধিকাংশ জেলায় আগামী ৭ জুলাই সোমবার পর্যন্ত জারি আছে জরুরি অবস্থা। ভিটেমাটি হারানো পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের জন্য আপাতত পাঁচ হাজার রুপি সহায়তা দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
অন্যদিকে বন্যা ও ভূমিধসের সঙ্গে লড়ছে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীনের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের বাসিন্দারা। বৃষ্টিপাত বন্ধের কোনো সম্ভাবনা দেখা না যাওয়ায় সিচুয়ান, লিয়াওয়ানিং ও গানসু প্রদেশে জারি আছে লাল সতর্কতা। স্থগিত করা হয়েছে বেইজিংগামী কয়েকটি ট্রেন। সাম্প্রতিক এই দুর্যোগে লাখ লাখ যেমন মানুষ ঘর ছাড়া হয়েছেন তেমনি দেশটির দুই দশমিক আট বিলিয়ন ডলারের কৃষিখাতে লোকসান নিয়েও ভাবছে হচ্ছে শি জিন পিং প্রশাসনকে।