যুদ্ধ বন্ধ না করলে মস্কোর ওপর ১০০ শতাংশ সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প | ছবি: সংগৃহীত
0

ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়াকে ৫০ দিনের আল্টিমেটাম দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যথায় মস্কোর ওপর ১০০ শতাংশ সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি তার। ইউক্রেনকে অস্ত্র দেয়ার বিষয়ে ন্যাটো প্রধান মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠকের পর এ কথা বলেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে ব্যাপক পরিসরে অস্ত্র পাঠাতে যাচ্ছে বলে নিশ্চিত করেন ন্যাটোর প্রধান। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এ নিষেধাজ্ঞাকে থোরাই কেয়ার করলো মস্কো।

ক্ষমতায় বসার আগেই এক দিনের মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ অবসানের আওয়াজ তুলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বড়াই করেছিলেন যুদ্ধ বন্ধে নিজের সক্ষমতা সম্পর্কে। তবে ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও বন্ধ হয়নি দু'দেশের যুদ্ধ।

অবশ্য গেলো কয়েকমাস ধরেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে যুদ্ধ বিরতি ইস্যুতে কয়েক দফা আলোচনার করেছেন ট্রাম্প। এতকিছুর পরও চূড়ান্ত কোনো সমাধানে পৌঁছানো যায়নি এখনও।

এবার ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ৫০ দিনের আল্টিমেটাম দিলেন ট্রাম্প। অন্যথায় মস্কোর ওপর ১০০ শতাংশ সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। ইউক্রেনকে অস্ত্র পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটো প্রধান মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানান ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘পুতিনের ওপর খুবই অসন্তুষ্ট। সে বিষয়ে আরেকদিন বলবো। তবে রাশিয়া যদি ৫০ দিনের মধ্যে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ না করে তবে ১০০ শতাংশ সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপ করা হবে মস্কোর ওপর।’

সেসময় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেন ট্রাম্প। বলেন, ফোনে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সন্তোষজনক আলোচনা হওয়ার পরেও ইউক্রেনে লাগাতার হামলা চালিয়ে চালাচ্ছেন পুতিন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে ফোনে পুতিনের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনার পর বাসায় গিয়ে ফার্স্ট লেডিকে বিষয়টি জানাই। এর পরই সে জানায়, পুতিন আবারও ইউক্রেনের আরেকটি শহরে আক্রমণ করেছে। এ নিয়ে তিন থেকে ৪ বার এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে।’

পুতিনের কর্মকাণ্ডে হতাশ হয়ে এবার ইউক্রেনের সুরক্ষায় প্যাট্রিয়টসহ কোটি ডলারের সর্বাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপও অস্ত্র পাঠাবে ইউক্রেনে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ন্যাটো প্রধান।

ন্যাটো প্রধান মার্ক রুট বলেন, ‘ন্যাটোর মাধ্যমে কীভাবে ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানো যায় সে ইস্যুতে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও পেন্টাগনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে প্যাকেজের ব্যবস্থা করা হবে। ইউক্রেন তাদের আকাশ প্রতিরক্ষাসহ ব্যাপক পরিসরে অন্যান্য সামরিক যান পাবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে।’

ইউক্রেনকে অস্ত্র পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটো প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করায় ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘মার্কিন দূত কেথ কেলগের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষায় সমর্থন অব্যাহত রাখায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

তবে যুক্তরাষ্ট্রের এ নিষেধাজ্ঞার হুমকি প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে পুতিনকে চাপ দিয়ে আলোচনার টেবিলে আনতে চান ট্রাম্প। এছাড়াও, এই ৫০ দিনের আল্টিমেটামে যুদ্ধক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

ইউক্রেনের সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ইউলিয়াম বি টেইলর বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন লাভজনক উপায়ে দীর্ঘ মেয়াদে ইউক্রেনকে অস্ত্র দেবে। পুতিনকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে, আগামী ৫০ দিনের মধ্যে তিনি যুদ্ধে জয়ী হচ্ছেন না। কৌশলে ইউক্রেনীয়দের অপেক্ষা করাচ্ছেন তিনি। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ’র সময়ক্ষেপণ করছেন পুতিন।’

এদিকে ট্রাম্পের শত হুঁশিয়ারির মাঝেও ইউক্রেনে হামলা অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। সোমবারও দেশটির পূর্বাঞ্চলের দুটি গ্রাম দখলে নেয়ার দাবি করে মস্কো।

সেজু