বিশ্বনেতা থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক জোট, মানবাধিকার সংস্থাগুলো যখন বারবার মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত বন্ধে জোর দিচ্ছে তখন বিশেষ ঐ অঞ্চলটিতে নিজেদের আধিপত্য কীভাবে আরও বাড়ানো যায় সেই পথে হাঁটছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। জোট সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন হারিয়েও সংঘাত থামানোর কোনো চেষ্টাই করছেন না যুদ্ধবাজ এ নেতা। বরং এবার প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বাড়ানোর ঘোষণা এসেছে ইসরাইলের অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।
জেরুজালেম পোস্টের একটি প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অংশে ইরানের অক্ষশক্তিদের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে ২০২৪ সালে প্রায় ২৪ হাজার ৩শ কোটি ডলার খরচ করেছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। ২০২৩ এর তুলনায় যা ১৫ শতাংশ বেশি। আরও পেছনে গেলে দেখা যায়, ২০১৫ এর তুলনায় ২০২৪ এ ব্যয় বেড়েছে প্রায় ১৯ শতাংশ। আর প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়ের হিসাবে ২০২৪ সালে নেতানিয়াহু প্রশাসনের খরচ বেড়েছে ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত। অংকের হিসাবে যা প্রায় ৪ হাজার ৬৫০ কোটি ডলার। এটি ইসরাইলের মোট জিডিপির ৮ দশমিক ৮ শতাংশ। এবং গোটা বিশ্বে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দের হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
এমন প্রেক্ষাপটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে প্রতিরক্ষা খাতে ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার খরচের ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইলের অর্থ মন্ত্রণালয়। এ সংক্রান্ত বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া, দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর ও যুদ্ধ সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রে এ অর্থ ব্যয় করা যাবে।
সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে ১২ দিনের সংঘাত ছাড়াও গত ২১ মাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই হামাস, হিজবুল্লাহ ও হুথিদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে কাজ করছে ইসরাইলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম। ইন্টারসেপ্টর ফুরিয়ে যাওয়ায় তা বারবার কিনতে জোগাড় করতে হচ্ছে ইসরাইলকে। গাজা যুদ্ধের পাশাপাশি লেবানন ও ইয়েমেনে ইরানের অক্ষশক্তি আর সবশেষ সিরিয়ায় সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন নেতানিয়াহু। মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক গণমাধ্যমের দাবি, সামরিক খাতে এই ব্যয় জানান দিচ্ছে, আপাতত মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত বন্ধে শান্তিপূর্ণ কোনো সমাধানে আগ্রহ নেই ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর।