দাবানলের লেলিহান শিখায় দাউদাউ করে পুড়ছে ইউরোপের দেশ ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চল। ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে ছেয়ে গেছে মার্টিগুয়েসের আকাশ। দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মার্সেইয়েও তাণ্ডব চালাচ্ছে দাবানল।
দক্ষিণাঞ্চলের ৫৯৩ একর বনজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে আগুন। ভয়াবহ দাবানল নিয়ন্ত্রণেই কাজ করছে দমকল বাহিনীর প্রায় ১,০০০ সদস্য। অগ্নিনির্বাপক গাড়ি ও হেলিকপ্টার দিয়ে সমানতালে চলছে আগুন নেভানোর লড়াই।
মার্সেইয়ে শহরের বিমানবন্দরটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। দাবানল ছড়িয়ে পড়ায় ওই এলাকা ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন বাসিন্দারা। চলতি মাসের শুরুতে দাবানলের হানায় মার্সেইয়ের উত্তরে কমপক্ষে ৭৫০ হেক্টর এলাকা পুড়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘আমরা ঘর নিয়ে চিন্তা করি না। জীবনটাই গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রতিবেশী এবং পোষা প্রাণীগুলো নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছি।’
মার্টিগুয়েসের ১৫০টি বাড়ি এবং ওই এলাকার বনের কিছু অংশে সফল উদ্ধার অভিযানের দাবি করছেন দমকলকর্মীরা। দেড় শতাধিক বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ারও খবর দিয়েছেন ফায়ার ফাইটাররা। ১২০টি বাড়ি হুমকির মুখে। তবে মার্টিগুয়েসে আবহাওয়া কিছুটা অনুকূলে আসার আভাস মিলছে বলে জানিয়েছে দমকল বাহিনী।
ফ্রান্স অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের উপ-পরিচালক কর্নেল পিয়েরে বেলপইক্স বলেন, ‘তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। বাতাসে আর্দ্রতা বাড়ছে, যা মার্টিগুয়েসে আগুনের বিরুদ্ধে লড়াই এবং দাবানল নেভানোর জন্য কিছুটা অনুকূল পরিবেশ। তবে দক্ষিণ থেকে আসা সমুদ্রের বাতাসে দাবানল ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিও আছে।’
স্পেন:
এদিকে স্পেনকেও গ্রাস করছে দাবানল। মেন্ট্রিডা শহরের কাস্টিল এবং লা মাঞ্চা অঞ্চলের কাছে দাবানলের সূত্রপাত থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। প্রবল বাতাসে পার্শ্ববর্তী মাদ্রিদ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। শুক্রবার ভোরেই মাদ্রিদের কাছে ৩,০০০ হেক্টরেরও বেশি এলাকা পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছে দমকল বাহিনী।
মাদ্রিদ থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত নাভালুঙ্গায়ও দাবানল শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে নাভালুঙ্গার ৭০০ হেক্টরেরও বেশি জমি পুড়ে গেছে। চারদিকে দাবানল ছড়িয়ে পড়ায়, আগুন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন দমকলকর্মীরা। আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার হচ্ছে ১০ টিরও বেশি দমকল বিমান। চারদিকে দাবানলের আগুন ছড়িয়ে পড়ায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন কাতালোনিয়ার হাজার হাজার মানুষ।
এ অবস্থায় অঞ্চলগুলোর আবাসিক এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়ার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। ঘরে ভেতরে থাকা মানুষ যাতে ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে না পড়েন, তার জন্য জানালা বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ফায়ার ফাইটাররা।