হাওয়াই দীপপুঞ্জের বনাঞ্চলে গেল জুনে দেখা গেল এক অভিনব দৃশ্য। ড্রোন থেকে নেমে আসছে ডজন ডজন জৈব পচনশীল ক্যাপস্যুল। যা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে প্রায় হাজার খানিক মশা।
তবে এগুলো কোনো সাধারণ মশা নয়, কাউকে কামড়ও দেয় না। ল্যাবে উৎপাদিত পুরুষ এসব মশা বিশেষ একটি উদ্দেশ্যে এই বনাঞ্চলে ছাড়া হয়।
হাওয়াইয়ের বিপন্ন বিশেষ করে হানিক্রিপারস পাখিদের রক্ষা করতেই উদ্যোগ। এই বনাঞ্চলে এই পাখি ছিল প্রায় ৫০টির বেশি প্রজাতির। কিন্তু এখন টিকে আছে মাত্র ১৭টি যার বেশিরভাগই বিলুপ্তির মুখে। মশার মাধ্যমে ছড়ানো অ্যাভিয়ান ম্যালেরিয়া নামের এক রোগে মারা যাচ্ছে হানিক্রিপারসরা।
এ সমস্যা সমাধানে ব্যবহার করা হচ্ছে ইনকমপেটিবল ইনসেক্ট টেকনিক বা আইআইটি। এই প্রযুক্তির আওতায় ল্যাবে তৈরি করা হয় পুরুষ মশা যারা ওলবাশিয়া নামের এক প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়ায় সংক্রমিত। এই মশার সাহায্যে স্ত্রী মশার প্রজনন বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার কারণে ধীরে ধীরে মশার সংখ্যা কমে যায়।
প্রতি সপ্তাহে ১০ লাখেরও বেশি মশা ড্রোন ও হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ছাড়া হচ্ছে মাউই ও কাওয়াই দ্বীপে। প্রথমদিকে এই কাজে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হলেও তা ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এখন ব্যবহার হচ্ছে বিশেষভাবে প্রস্তুত ড্রোন। এসব ড্রোন দিয়ে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়ও মশা ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব।
গবেষকরা বলছেন, এটি পৃথিবীর প্রথম প্রকল্প, যেখানে মশা নিয়ন্ত্রণের এই পদ্ধতি প্রকৃতি সংরক্ষণের লক্ষ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাদের আশা, এই উদ্যোগ বিপন্ন পাখিদের জীবন রক্ষা করবে। ভবিষ্যতে আরও অনেক দেশে এই প্রযুক্তির ব্যবহার সম্ভব হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে থাকা প্রকৃতি রক্ষায় আশার আলো হয়ে এসেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি। হাওয়াইয়ের আকাশ থেকে ফেলা এই মশাগুলো তাই কোনো হুমকি নয়, বরং এক আশার প্রতীক।