রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ১৯৮৭ সালে, যার আওতায় দুই দেশের তৈরি ৫০০ থেকে সাড়ে ৫ হাজার কিলোমিটার পাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসে একমত হয়েছিল দুই দেশ। তবে ২০১৯ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে চুক্তি থেকে বের হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে ওয়াশিংটন। যদিও মস্কোর দাবি, যুক্তরাষ্ট্র এসব অস্ত্র মোতায়েন না করলে, রাশিয়াও করবে না।
সম্প্রতি রুশ নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে পারমাণবিক ইস্যুতে বাকযুদ্ধ শুরু হয়। এর জেরে দু’টি মার্কিন পারমাণবিক সাবমেরিন উপযুক্ত অঞ্চলে মোতায়েনের নির্দেশ দেন ট্রাম্প, যা উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
আরও পড়ুন:
এবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি থেকে বের হয়ে আসার ঘোষণা দিলো মস্কো। মেদভেদেভ জানান, ইউরোপ ও এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য মাঝারি ও স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সম্ভাবনার কারণে মস্কো বাধ্য হয়েছে এ চুক্তি থেকে সরে আসতে। এছাড়া রাশিয়াবিরোধী নীতির জন্য ন্যাটোর বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ নেয়ার হুঁশিয়ারি জানিয়েছে মস্কো।
এদিকে রাশিয়া বলেছে, পারমাণবিক আলোচনায় সবারই সতর্ক থাকা উচিত। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, মার্কিন সাবমেরিনগুলো মোতায়েন যুদ্ধের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে এ বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করার কোনো ইচ্ছা নেই মস্কোর।
ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘এটি স্পষ্ট যে মার্কিন সাবমেরিনগুলো এরই মধ্যে যুদ্ধের দায়িত্বে আছে। এটি একটি আদর্শ পদ্ধতি। তবে সাধারণত, এসব বিষয়ে এ ধরনের বিতর্ক বা মন্তব্য করতে রাশিয়া কখনোই পছন্দ করে না। পারমাণবিক সমস্যা সম্পর্কিত যেকোনো বিবৃতির ক্ষেত্রে সবাইকে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ নেয়া উচিত। রাশিয়া একটি দায়িত্বশীল অবস্থানে আছে।’
খারকিভ অঞ্চলে সম্মুখযুদ্ধের এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, পাকিস্তানসহ চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করার জন্য ভাড়াটে সেনা পাঠিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ নেয়ার হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘বেশকিছু প্রতিবেদন দেখেছি। আমার কাছে তথ্য আছে। বিষয়গুলো খুব একটা সহজ নয়। ইউক্রেনের সেনাদের তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, চীন ও পাকিস্তানের ভাড়াটে সেনাদের বিরুদ্ধেও লড়াই করতে হচ্ছে ।’
তবে জেলেনস্কির এমন দাবিকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনের সংঘাতে পাকিস্তানি কোনো নাগরিক জড়িত নয়। তাদের বক্তব্য, ইউক্রেনের এ ধরনের দাবির পেছনে কোনো সত্যতা নেই। তারা কোনো প্রমাণও দিতে পারেনি।
এদিকে জাপান সাগরে দ্বিতীয় দিনের মতো যৌথ মহড়া চালিয়েছে রাশিয়া ও চীন। পাঁচ দিনের এই মহড়ায় সাবমেরিন-বিধ্বংসী, বিমান প্রতিরক্ষা, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ এবং সমুদ্রে অভিযানের ওপর চলে অনুশীলন।