২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের ক্ষমতায় ছিল ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ বা পিটিআই। এরপর ক্ষমতার পালাবদলে একের পর এক মামলায় অভিযুক্ত হন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তোষাখানা মামলায় ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট গ্রেপ্তার হন তিনি। বর্তমানে আদিয়ালা কারাগারে দুর্নীতির মামলায় সাজা ভোগ করছেন। এছাড়া, ইমরানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ আইনে একাধিক মামলায় বিচারাধীন আছে।
ইমরান খান জেলে যাওয়ার পর থেকেই তার মুক্তির দাবিতে বেশ কয়েকবার আন্দোলন-বিক্ষোভে নামে পিটিআই সমর্থকেরা। গেল বছর ইমরান সমর্থকদের সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভে কয়েকদিনের জন্য অচল হয়ে পড়ে রাজধানী ইসলামাবাদ। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।
এবার কারাবন্দীর দুই বছর পূর্তি ঘিরে এক্স বার্তায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত দেশব্যাপী আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ডাক দেন ইমরান খান। এরপরই রাস্তায় নেমে আসে হাজারো মানুষ। আন্দোলন দমাতে বিভিন্ন জেলায় জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। ইসলামাবাদে সড়ক অবরোধের ঘোষণা দেয় পিটিআই। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় দলটির সমর্থকরা। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে পুলিশ। বিক্ষোভকারীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।
আরও পড়ুন:
পিটিআইর কর্মসূচি বাতিল করতে দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু ব্যাপক ধরপাকড়। লাহোরের একটি আদালতের সামনে ‘ইমরান খানকে মুক্ত কর’ স্লোগান দেয় সমর্থকেরা। শুধু লাহোর থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় দেড় শতাধিক নেতাকর্মীকে। এছাড়া, করাচি ও মুজাফফরাবাদ শহরসহ বিভিন্ন প্রদেশে রাতভর অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় বহু সমর্থককে।
২০১৮ সাল থেকে শাসন করে আসা খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সমাবেশ করে হাজার হাজার পিটিআই সমর্থক। রিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেল, ট্রাক্টর ও বিভিন্ন যানবাহনে করে সমাবেশে যোগ দেয় তারা। যদিও পুলিশি বাধায় তা ভেস্তে যায়। এরপর থেকেই প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুরের খোঁজ মিলছে না। এদিকে, পাঞ্জাব আঞ্চলিক সরকারের মুখপাত্র উঝমা বুখারি পিটিআইকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
২০২৩ সালের ৯ মে ইমরানের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ হয়। এর জেরে দাঙ্গা সৃষ্টির অভিযোগে তার দলের শীর্ষ ৯ সংসদ সদস্যকে মঙ্গলবার অযোগ্য ঘোষণা করে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন। সামরিক ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ভাঙচুরের অভিযোগে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
গেল জুলাই মাসে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ ৯০ দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। ইমরান খানকে মুক্ত করতে প্রতি সপ্তাহে ডু অর ডাই এই স্লোগানে বিক্ষোভ করবে তারা।