মার্কিন শুল্ক ঝড় মোকাবিলায় বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের চেয়ে আরও এক ধাপ পিছিয়ে পড়লো ভারত। ওয়াশিংটনের হুমকি উপেক্ষা করে রাশিয়ার জ্বালানি তেল কেনা অব্যাহত রাখায়…শাস্তি হিসেবে নয়াদিল্লির ওপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক যোগ করে নির্বাহী আদেশে সই করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে ভারতীয় পণ্যে অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্কের বোঝা চাপলো। আগের গড় শুল্কহার ৫-১০ শতাংশের সাথে এখন ভারতীয় পণ্যে যুক্ত হবে ৫০ শতাংশ।
রুশ তেল কেনা বন্ধ না করায় ইউক্রেন যুদ্ধে ভারত ইন্ধন যোগাচ্ছে বলে আগে থেকেই অভিযোগ করে আসছিলেন ট্রাম্প। মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামও দিয়েছিলেন। এরপরও বিষয়টি আমলে নেয়নি নরেন্দ্র মোদি। অবশেষে চরম পর্যায় পৌঁছালো ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লি বাণিজ্য উত্তেজনা।
এবার যোগ করা নতুন ২৫ শতাংশ শুল্ক, ২১ দিন পর ২৭ আগস্ট কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। এছাড়া সিদ্ধান্তটি এমন একসময় আসলো যখন ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সম্মত হতে রাশিয়াকে চাপ দেয়ার লক্ষ্যে মস্কোতে অবস্থান করছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। ইতিমধ্যে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন উইটকফ।
আরও পড়ুন:
এদিকে ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্কারোপের ঘোষণায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত সরকার। এই শুল্ককে অন্যায্য ও অযৌক্তিক বলে অভিহিত করেছে দেশটি। সেই সঙ্গে জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার কথাও জানিয়েছে দেশটি। ভারতের বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন, ভূ-রাজনীতি বা জোটবদ্ধ হওয়ার কোনো কারণে নয়, কেবল অর্থনীতির স্বার্থে রাশিয়ার কাছ থেকে কম দামে তেল কিনছে নয়াদিল্লি।
ভারতের জ্বালানি পণ্য বিশেষজ্ঞ নরেন্দ্র তানেজা বলেন, ‘আমাদের সরকারি-বেসরকারি খাতের সব কোম্পানি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করে। কারণ রাশিয়া অনেক কম দামে তেল দিচ্ছে। এটাই একমাত্র কারণ। এটি ভারত সরকার দ্বারা নির্ধারিত নয় বা ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এমন কোনও নীতি নেই। তাই আমি মনে করি এটি রাশিয়ার প্রতি ভালোবাসার জন্য নয়, অর্থনীতির স্বার্থে নেওয়া সিদ্ধান্ত।’
এদিকে রাশিয়ার জ্বালানি তেল কিনছে চীন তবুও তাদের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা চলমান রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে বাড়তি শুল্ক চাপিয়ে দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক সবচেয়ে সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে বলে মনে শঙ্কা প্রকট হচ্ছে।
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমাদানিকারক ও ব্যবহারকারী ভারত রাশিয়া থেকে ৩৫ শতাংশ তেল আমদানি করে। তালিকায় এর পরেই রয়েছে- ইরাক, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।