শুক্রবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলকে স্বাগত জানিয়ে এভাবেই তৃপ্তির ঢেকুর তুললো রাশিয়া। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ দাবি করলেন, ৩৩ পৃষ্ঠার মার্কিন এ নথির অনেক কিছুই রাশিয়ার কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এ ইতিবাচক মন্তব্য করেন তিনি। তবে মার্কিন নথিটি আরও বিশ্লেষণ করে মস্কো চূড়ান্ত মন্তব্য জানাবে বলেও জানান ক্রেমলিন মুখপাত্র।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘বর্তমান মার্কিন প্রশাসন আগের প্রশাসনের থেকে মৌলিকভাবেই আলাদা। অবশ্যই, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন শক্তিশালী। আমরা নতুন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে যে সমন্বয়গুলো দেখতে পাচ্ছি তা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে অনেকভাবে মিলে যায়। এতে বোঝা যায় ইউক্রেনের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করার জন্য গঠনমূলক পথে যৌথভাবে কাজ অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে।’
ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল অনেক দিক দিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে মিলে যাওয়ায় নিজেদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে ইউরোপ। ইতোমধ্যেই কৌশলটির ভাষা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইইউর বিভিন্ন কর্মকর্তা। বলা হচ্ছে, নিরাপত্তা কৌশলের নথিতে থাকা অনেক বিষয়বস্তুর কারণে ইউরোপ সভ্যতার বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি এই নীতি ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে রাশিয়ার কাছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পুরো পশ্চিমা অবস্থানকে দুর্বল করে দেবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ভেদেফুল বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের ন্যাটো জোটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। তবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বা আমাদের সমাজব্যবস্থা কেমন হবে, এসব বিষয়গুলো মার্কিন কৌশলগত নথিতে থাকা উচিত কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি বহিরাগত পরামর্শ ছাড়াই ইউরোপ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম হবে।’
আরও পড়ুন:
বিদেশি প্রভাব মোকাবিলা, অভিবাসন বন্ধ করা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কথিত সেন্সরশিপ নীতির বিরোধিতার মতো বিষয়গুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিরাপত্তা কৌশলে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। নথিতে আরও বলা হয়, কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের অর্থনীতি ও সেনাবাহিনী ভবিষ্যতে পর্যাপ্ত শক্তিশালী থাকবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা ব্যাহতে ইইউ'কে দায়ীও করা হয়েছে নথিতে। বিপরীতে কৌশলপত্রে রাশিয়াকে ঘিরে তুলনামূলক নরম ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে।
নতুন নিরাপত্তা কৌশলে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা হয়েছে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল। যেখানে অঞ্চলটিকে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এছাড়া চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে সংঘাত রোধে মার্কিন সামরিক শক্তি সম্প্রসারণেরও প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিরাপত্তা কৌশলে।





