‘বন্ডাই সৈকতে হামলাকারীর ফিলিপিন্সে সামরিক প্রশিক্ষণ নেয়ার প্রমাণ মেলেনি’

বন্ডাই সৈকতে হামলাকারীরা
বন্ডাই সৈকতে হামলাকারীরা | ছবি: সংগৃহীত
0

বন্ডাই সৈকতে হামলাকারী বাবা-ছেলে ফিলিপিন্সে গিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলো- এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। আর বিশ্লেষকরা বলছেন, এ হামলার সঙ্গে জাতিগত বিদ্বেষের যোগসূত্র থাকায় বিভ্রান্তিপূর্ণ খবর প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।

অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই সৈকতে হামলাকারী বাবা-ছেলে সাজিদ ও নাভিদের পরিচয় প্রকাশে পর থেকে একের পর এক চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন প্রকাশ করতে শুরু করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। সাজিদ-নাভিদের সঙ্গে পাকিস্তানের যোগসূত্র, গাড়িতে ইসলামিক স্টেটের পতাকা, পাইপ বোমা, হামলার আগে প্রায় একমাস ফিলিপিন্সে অবস্থান-এসব সূত্র থেকে হাজির করা হয় অনেক মনগড়া থিওরি।

জীবিত হামলাকারী নাভিদ আকরামের বিরুদ্ধে ১৫টি হত্যাকাণ্ড ও ৫০টিরও বেশি অপরাধের অভিযোগ আনার হলেও বন্ডাই হত্যাকাণ্ড তদন্তের অনেক কিছুই এখনও অস্পষ্ট।

মঙ্গলবার এবিসি নিউজ অস্ট্রেলিয়া একটি প্রতিবেদনে দাবি করে ১ নভেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত ফিলিপিন্সে থাকাকালীন সময় সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বাবা-ছেলে সাজিদ ও নাভিদ। পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন জানায়, ফিলিপিন্সে প্রবেশের সময় ম্যানিলার কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে নিজেকে ভারতীয় বলে পরিচয় দেন করেন সাজিদ। আর অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, হামলাকারীর গাড়ি থেকে পাওয়া গেছে পাইপ বোমা ও ইসলামিক স্টেটের ঘরে তৈরি পতাকা।

এসব তথ্য সামনে আসায় নতুন করে ফিলিপিন্সে ইসলামিক স্টেটের তৎপরতা, নেটওয়ার্ক, আইএসের ইহুদি বিদ্বেষ দিয়ে আলোচনা শুরু হয়। কিন্তু এসব গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে ফিলিপিন্সের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সাফ জানিয়েছেন, সাজিদ নাভিদ ফিলিপিন্সে এসে সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এমন কোনো প্রমাণ নেই।

আরও পড়ুন:

নিরাপত্তা উপদেষ্টা আরও দাবি করেছেন, এক মাসের কম সময় জন্য অর্থবহ বা কাঠামোগত প্রশিক্ষণের অনুমতি দেয় না ম্যানিলা। বিবৃতিতে আরও অভিযোগ করেছেন, ফিলিপিন্সকে হেনস্থা করার জন্য বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে। সিঙ্গাপুর-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সিএনএর দাবি, ফিলিপিন্সে অবস্থানের সময় বেশিরভাগ সময় হোটেলের ঘরেই থাকতেন বাবা ও ছেলে।

বন্ডাই সৈকতে হামলা জাতিগত বিদ্বেষ থেকে করা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সরকারের এ অভিযোগ আমলে নিলেও হামলাকারীরা ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন ব্যাখ্যা মানতে নারাজ বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, আইএসের পতাকা থাকলেই প্রমাণ হয় না তারা নিষিদ্ধ সংগঠনের কর্মী। হতে পারে সাজিদ-নাভিদ আইএসের অনুসারী ছিলেন, কিন্তু এ হামলার সঙ্গে সরাসরি ইসলামিক স্টেটের কোনো সংযোগ নেই বলে বলে করেন তারা।

সুনির্দিষ্টভাবে, ইহুদি সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানে হামলা, ১৯৯৮ সালে হামলাকারী সাজিদের পাকিস্তান থেকে অস্ট্রেলিয়ায় আসা, হামলার সময় ব্যবহৃত গাড়িতে আইএসের পতাকা রাখা এসব কারণে- এ হামলার সঙ্গে ইসলামিক স্টেটের একটি যোগসূত্র স্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু উপযুক্ত কোনো প্রমাণ না থাকায় একে আমলে নিতে চান না বিশ্লেষকরা।

এফএস