যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পরমাণু বৈঠকের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি ও তেহরানের ভবিষ্যৎ। গেল শনিবার পরমাণু ইস্যুতে ট্রাম্পের বিশেষ প্রতিনিধির সাথে বৈঠকের পর একের পর এক কূটনৈতিক আলোচনায় বসছেন ইরানের কর্তাব্যক্তিরা।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানী তেহরানে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রসির সাথে দেখা করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। তেহরান সূত্রের দাবি, রোমে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে রাফায়েলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইরানের পররাষ্ট্র দপ্তর। সাক্ষাতের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি মন্তব্য করেন করেন, পরমাণু বৈঠকে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ সংস্থা, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ‘একটি দেশের পরমাণু কর্মসূচি বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেয়ার মতো একমাত্র বৈধ এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি। পরমাণু ইস্যুতে কেবল সংস্থাটিকেই বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করি।’
ইরানের প্রস্তুতি এখানেই শেষ হচ্ছে না। জাতিসংঘ নিউক্লিয়ার ওয়াচডগ প্রধানের সাথে সাক্ষাতের পর রাশিয়ায় পাড়ি দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। দেখা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে। ক্রেমলিন নিশ্চিত করেছে, রুশ প্রেসিডেন্টের কাছে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার আয়াতুল্লাহ খামেনির বিশেষ এক বার্তা পৌঁছে দিতে মস্কোতে এসেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি।
ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মস্কো সফরে এসেছেন। রুশ পররাষ্ট্র দপ্তরের সাথে কাজ করবেন তিনি। ইরানের সর্বোচ্চ নেতার পাঠানো বিশেষ একটি বার্তা প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে পৌঁছে দেয়ার কথা রয়েছে।’
মস্কো সফরের আগে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি তেহরানের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রথমে পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করার প্রস্তাব দিলেও এখন বলছে এই কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের এই আচরণে পেশাদারিত্বের অভাব দেখেছে তেহরান।
তবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বস্ত করেন, পরিস্থিতি ঘোলাটে না করে ঠাণ্ডা মাথায় আলোচনায় বসতে চায় তেহরান। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইতালির রোমে শনিবার অনুষ্ঠেয় দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব গুরুত্ব দিতে শোনা হবে।
গেল ১২ এপ্রিল ওমানে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় নিয়ে বৈঠক করেন ট্রাম্পের বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ। প্রথম ধাপের এই আলোচনা গঠনমূলক হয়েছে বলে দাবি করেন দু'জনই। কিন্তু দ্বিতীয় দফার বৈঠকটি কোথায় অনুষ্ঠিত হবে এ নিয়ে সৃষ্টি হয় বিভক্তি।
ইরান-যুক্তরাষ্ট্র বৈঠকের আঁচ পৌঁছেছে সৌদি আরবেও। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এসপিএ নিশ্চিত করেছে শনিবারের এই বৈঠক কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার তেহরানে পাড়ি দিয়েছেন সৌদির প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান।