গত বুধবার (১৪ মে) থেকে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়ায় মানববন্ধন শুরু করে তার সমর্থকরা।
ওইদিন ৮টা থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সামনের সড়ক এবং নগরভবনের সামনে মানববন্ধনে জড়ো হন ইসরাক হোসেনের কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক, বিএনপির কর্মী ও দক্ষিণ সিটির নাগরিকরা। এরপর থেকে প্রতিদিনই বিক্ষোভ করছেন তারা।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে প্রায় পৌনে ২ লাখ ভোটে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তবে গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল ওই ফল বাতিল করে ইশরাককে বৈধ মেয়র ঘোষণা করেন।
এরপর ২২ এপ্রিল আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চেয়ে নির্বাচন কমিশন ট্রাইব্যুনালের রায় পাঠায়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মতামত না আসায় ২৭ এপ্রিল ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।
৩০ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনার জানান, আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করতেই গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। পরে নির্বাচন কমিশন জানায়, তারা ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে না। তবে গেজেট প্রকাশের দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ইশরাক হোসেন এখনো শপথ নিতে পারেননি। কারণ, শপথ অনুষ্ঠানের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার বিভাগের, যারা এখনও শপথ আয়োজন করেনি।
এর আগে আলোচিত রায়ের বিষয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও অসঙ্গতি উল্লেখ এবং ইশরাক হোসেনের শপথ আয়োজন করা থেকে বিরত থাকতে স্থানীয় সরকার বিভাগকে অনুরোধ জানিয়ে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মো. মামুনুর রশিদের একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
পরবর্তীতে মো. মামুনুর রশিদ নির্বাচনী মামলা নং ১৫/২০২০ এ প্রদত্ত বিজ্ঞ নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের গত ২৭ মার্চের রায় ও ডিক্রি, এবং নির্বাচন কমিশনের ২৭ এপ্রিল জারিকৃত সংশোধিত গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করেন।
রিট মামলায় ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানো থেকে বিরত থাকতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতি এবং প্রতারণামূলক রায় প্রদানের জন্য নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন, বিচার ও সংসদ মন্ত্রণালয়ের প্রতি নির্দেশনা প্রার্থনা করা হয়েছে।
হাইকোর্টে রিট এবং মামলা বিচারাধীন অবস্থায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী এমন আন্দোলন আদালতের প্রতি অনাস্থা অথবা অবমাননার শামিল বলেও জানানো হয়। নাগরিক সেবা ব্যহত ও অচলাবস্থা দূর করতে আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের প্রতি স্থানীয় সরকার বিভাগ উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছে।