তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে পথ খুলে দিলো হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়

হাইকোর্ট প্রাঙ্গন
হাইকোর্ট প্রাঙ্গন | ছবি: সংগৃহীত
0

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিধান বিলুপ্ত করা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর অংশটি বাতিল ও সংবিধানের যেকোনো সংশোধনী আনতে গণভোটের বিধান পুনরুজ্জীবিত করে হাইকোর্ট পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন। এর ফলে দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের যে বিধান আওয়ামী লীগ করেছিল, তা বাতিল হয়ে গেল। তার জায়গায় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরার পথ সুগম হলো।

আজ (মঙ্গলবার, ৮ জুলাই) দুপুরে এ রায় প্রকাশ করা হয়। গেল ডিসেম্বরে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে করা দুই রিট মামলার রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দিয়েছিলো।

এ রায়ে সংবিধানের ১৪২ নম্বর অনুচ্ছেদও পুনরুজ্জীবিত হলো। এ ধারায় গণভোটের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ, ৪৪ (২) অনুচ্ছেদ বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে সংবিধানের একটি বড় অংশের পরিবর্তন অসম্ভব করে রাখা হয়েছিলো।

উল্লেখযোগ্যভাবে, ৭ক অনুচ্ছেদে সংবিধান বাতিল বা স্থগিত করাকে অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল, আর ৭খ অনুচ্ছেদে সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলী সংশোধন অযোগ্য বলে নির্ধারণ করা হয়েছিল। ৪৪ (২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল, হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতা অক্ষুণ্ন রেখে সংসদ আইনের মাধ্যমে অন্য কোনো আদালতকে সেই ক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগ দেওয়া যাবে।

রায়ে আরও বলা হয়েছে, পঞ্চদশ সংশোধনী আইন সম্পূর্ণরূপে বাতিল করা হচ্ছে না। যেসব ধারা অবশিষ্ট থাকছে, সেগুলো পর্যালোচনার দায়িত্ব পরবর্তী জাতীয় সংসদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হলো। নতুন সংসদ জনমতের ভিত্তিতে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন, পরিমার্জন বা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এসব ধারার মধ্যে জাতির পিতার স্বীকৃতি এবং ২৬ মার্চের ভাষণের মতো বিষয় রয়েছে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন, রিটকারী সুজনের বদিউল আলমের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া। বিএনপির পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল। জামায়াতের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী। ইনসানিয়াত বিপ্লবের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। চার আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার নিশাত মাহমুদ, ইন্টারভেনর হিসেবে ছিলেন ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ।

এনএইচ