আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের জবানবন্দি

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল | ছবি: এখন টিভি
0

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেখানোর কথা বলে সমন্বয়কদের থেকে জোরপূর্বক ভিডিও বার্তা নেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘১৯ জুলাই রাতে গুম হওয়ার আশঙ্কায় গুলশান থেকে স্থান পরিবর্তনের চেষ্টা করছিলাম আমি। ঠিক সেই সময় ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল, আমরা শুধু ফোন কলেই যোগাযোগ করছিলাম।’ আজ (মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় জবানবন্দিতে একথা বলেন তিনি।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘পরে জানতে পারি, সেই সুযোগে ডিজিএফআই আমার মোবাইল ট্র্যাক করে আমাকে তুলে নেয়। ওই রাতেই নাহিদ ভাইকেও গুম করা হয়।’

জবানবন্দিতে তিনি আরও বলেন, ‘চোখ খুলে নিজেকে একটি অচেনা কক্ষে পাই। পরবর্তীতে ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত ডিজিএফআইয়ের আয়নাঘর পরিদর্শনের সময় বুঝতে পারি, আমাকেও সেখানেই রাখা হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক তাসনীম খলিলের ভাষ্যমতে, সেটি ছিল তথাকথিত ‘ভিআইপি’ সেল, যেখানে তুলনামূলক ভালো পরিবেশ থাকলেও, আমি ১৯ জুলাই শুক্রবার থেকে ২৪ জুলাই বুধবার পর্যন্ত গুম অবস্থায় ছিলাম। মুক্তির পর গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। যেখানে নাহিদ ভাইও চিকিৎসাধীন ছিলেন। সে সময় আমরা সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে ছিলাম।’

জবানবন্দিতে আরও বলেন, ‘ওইসময় সরকার কোটা আন্দোলনকারীদের দাবির অনুকূলে রায় ঘোষণা করে। ১৭ জুলাইয়ের পর থেকেই ডিজিএফআই, ইন্টারনাল এফআইএস ব্যুরো ও ডিএমপি-সিটিটিসির কয়েকজন কর্মকর্তা ‘সংলাপের’ চেষ্টা শুরু করে। কিন্তু এ আলোচনার আড়ালে চলতে থাকে নজরদারি, মোবাইল জব্দ ও আন্দোলন স্থগিতের চাপ।’

আরও পড়ুন:

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, ‘২৫ জুলাই ভিডিও বার্তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমাকে শারীরিকভাবে আঘাত করা হয়।’

লোমহর্ষক নির্যাতনের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২৬ জুলাই হাসপাতালে থেকে আমাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে। যেখানে ৬ দিন আটক রেখে জোরপূর্বক ভিডিও স্টেটমেন্ট নেয়া হয়। রমনা জোনের ডিসি হুমায়ুন আমাদের পরিবার ও আন্দোলনকারীদের নামে মামলা দেয়ার হুমকি দেন, আর ভিপি নূরকে সেখানেই মারধরের ঘটনা ঘটে।’

ডিবি কার্যালয়ে অনশন শুরু করলে খবর ছড়িয়ে পরে, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আমাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেন। অবশেষে ১ আগস্ট মুক্তি পাওয়ার পর আমরা আন্দোলনের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করি। ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ‘একদফা’ দাবির ঘোষণা দেই বলেও জানান যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।

সেজু