জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লিগ (জেবিপিএফএল)-এর সভাপতি তারো আসো দেশটিতে তার চার দিনের সফর শুরু করার সময় টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় অধ্যাপক ইউনূস এই অঙ্গীকার পুনর্নবীকরণ করেন।
নিক্কেই ফোরাম ফর এশিয়ায় যোগদান এবং জাপানি নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করার জন্য প্রধান উপদেষ্টা স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৫ মিনিটে টোকিও পৌঁছান।
জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তারো আসো, যিনি জেবিপিএফএলের পদে অধিষ্ঠিত; তিনি বাংলাদেশকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অধ্যাপক ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান। এ ছাড়া একটি মসৃণ গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য সাধারণ নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য কাজ করছে-সংস্কার, খুনিদের বিচার এবং সাধারণ নির্বাচন।
তিনি আরো বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্নির্মাণ এবং ঋণ পরিশোধে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করেছে। পূর্ববর্তী সরকার আমাদের দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে, তরুণদের এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বাধ্য করেছে। তরুণরা আমাকে যে জগাখিচুড়ি তৈরি হয়েছে তা ঠিক করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘জাপান গত দশ মাসে আমাদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে। আমি জাপানকে তার সহায়তার জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাতে চাই। এটি এক অর্থে একটি ধন্যবাদ সফর।’
অধ্যাপক ইউনূস আসোকে সরাসরি পরিবর্তনগুলো দেখার জন্য বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
বৈঠকে আসোর সঙ্গে থাকা বেশ কয়েকজন জাপানি আইনপ্রণেতা বলেছেন, অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষর করা বাংলাদেশে আরো জাপানি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে আরেকটি পদক্ষেপ হতে পারে। বাংলাদেশ আগস্টের মধ্যে আলোচনা শেষ করে সেপ্টেম্বরে চুক্তি স্বাক্ষর করার আশা করছে। স্বাক্ষরিত হলে, জাপানই হবে বাংলাদেশের সঙ্গে ইপিএ করা প্রথম দেশ।
প্রধান উপদেষ্টা জাপানি আইনপ্রণেতাদের কাছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের এজেন্ডা প্রচারে তাদের সহায়তা কামনা করেন।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট বিশ্বের অন্যান্য শরণার্থী সংকটের চেয়ে আলাদা। কারণ তারা অন্য কোনো দেশে যাওয়ার জন্য ভিক্ষা করছে না, বরং তাদের বাড়ি।’
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজিবিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।