জানা গেছে, লায়লা হুসেইন, যিনি ১০ জুলাই ঢাকা থেকে জেএফকে যাচ্ছিলেন এমিরেটসের (টিকিট নম্বর ১৭৬৭২১৬৪২৩৮৬৫) ফ্লাইট ইকে৫৮৭ (সিট ১১ এইচ) ও ইকে২০৫ (সিট ৪৭ সি)-এ, ঢাকা বিমানবন্দরে হুইলচেয়ার সুবিধা পেলেও দুবাই বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর ক্রুদের জানানো সত্ত্বেও প্রতিশ্রুত হুইলচেয়ার পাননি বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
এমিরেটসের গ্রাউন্ড স্টাফ তাকে অল্প হাঁটতে বললেও দীর্ঘ পথ হাঁটার পরও কোনো হুইলচেয়ার সহায়তা পাননি। দুবাই ট্রানজিটের সময় তাকে অন্য টার্মিনালে ট্রেন নিতে হলেও কোনো সহায়তা দেওয়া হয়নি বলে পরিবারের অভিযোগ।
মিলান বিমানবন্দরে ইকে২০৫ ফ্লাইটের দুই ঘণ্টার ট্রানজিটের সময় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। যেখানে সাধারণত জেএফকেগামী যাত্রীদের বিমান থেকে নামতে হয় না, সেখানে সব যাত্রীদের নামিয়ে আনা হয়, কিন্তু কোনো আসন ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
বিমানের প্রবীণ যাত্রী লায়লা হুসেইন দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হন। এতে বয়স ও শারীরিক অবস্থার কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
ঘটনায় বিমানের অন্য যাত্রীরাও বিস্ময় প্রকাশ করে প্রশ্ন তোলেন, ‘কীভাবে এমিরেটসের মতো একটি এয়ারলাইন্স কোনো সহায়তা না দিয়ে যাত্রীদের দুই ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে রাখতে পারে?’
নিউইয়র্কে বসবাসরত তার মেয়ে ইশরাত জাহান দুবাইয়ে এমিরেটস কাস্টমার সার্ভিসে মায়ের জরুরি সহায়তা চেয়ে যোগাযোগ করলে তিনি সংবেদনশীলতার অভাব লক্ষ্য করেন। তিনি জানান, এমিরেটসের একজন এজেন্ট তাকে বলেন, ‘তারা সাহায্য করতে পারবে না কারণ তিনি এখন মিলান বিমানবন্দরে নেই এবং কেন এই টিকিট কিনেছেন।’
একটি ফেসবুক পোস্টে ইশরাত ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘উচ্চমূল্যের টিকিটের বিনিময়ে এ ধরনের যাত্রী সেবা কী আমাদের প্রাপ্য? জীবনের সবচেয়ে খারাপ এয়ারলাইন্স অভিজ্ঞতা। যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতেও আমি আর কখনো এমিরেটস বেছে নেব না।’
হুইলচেয়ার সুবিধা ও বয়স্ক যাত্রী সেবার ক্ষেত্রে এমিরেটসের দুর্বল যাত্রী সেবা নিয়ে এর আগেও অভিযোগ উঠেছে। তবে সেগুলোর সমাধান হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশে ফ্লাইট সংকটের কারণে এমিরেটস ২০ শতাংশের বেশি যাত্রী শেয়ার নিলেও যাত্রীরা তাদের সেবার মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য এমিরেটসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
বিমান খাতের পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনাকারী আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার হিসেবে এমিরেটসের যাত্রী অধিকার, নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রয়েছে। বিশেষত হুইলচেয়ার প্রয়োজন এমন বয়স্ক যাত্রীদের ক্ষেত্রে।