আজ (সোমবার, ২১ জুলাই) দুপুরে এ ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর নিহত হয়েছেন। সবশেষ খবরে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ২০ জন নিহত হয়েছে, যার অধিকাংশই শিশু শিক্ষার্থী। গুরুতর আহত অবস্থায় রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১৭১ জন।
রাজশাহীর উপশহরের তিন নম্বর সেক্টরের আশ্রয় ভবনে ভাড়া বাসায় থাকতেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকিরের পরিবার। তার বাবা তহুরুল ইসলাম, মা সালেহা খাতুন, বোন সৃষ্টি এবং বোনজামাই এ বাসায় বসবাস করতেন।
বাসার মালিক আতিকুল ইসলাম জানান, তৌকির ইসলাম সাগর প্রথমবারের মতো একা যুদ্ধবিমান চালাবেন জেনে পরিবারের সবাই আনন্দিত ও উচ্ছ্বসিত ছিলেন। দুপুরের পর তারা বিমান বিধ্বস্তের খবর পান এবং জানতে পারেন সাগর ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তখনও তারা জানতেন না তৌকির আর বেঁচে নেই।
তিনি জানান, সাগরকে দেখতে পরিবারের সদস্যরা বিমানযোগে ঢাকা যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে একটি হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হয়। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে র্যাবের একটি মাইক্রোবাসে করে তাদের ভাড়া বাসা থেকে রাজশাহী শাহমখদুম বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখান থেকে তারা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।
আরও পড়ুন:
আতিকুল ইসলাম জানান, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামের বাবা-মা, বোন এবং বোনজামাই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে তার মৃত্যুর খবর জানতেন না। পরিবারের সদস্যরা মনে করেছিলেন সাগর জীবিত এবং চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তৌকির ইসলামের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট এলাকায়। তিনি রাজশাহীর ল্যাবরেটরী স্কুল অ্যান্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন এবং পরে পাবনা ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হন। এক বছর আগে তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকাকে বিয়ে করেন। তার বাবা আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা করেন।
এদিকে আইএসপিআর জানিয়েছে, দুর্ঘটনা মোকাবেলায় এবং বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম বিমানটিকে ঘনবসতি এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বিমানটি ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল এবং কলেজের দোতালা একটি ভবনে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়েছে।