দেশের কিছু মানুষ ও চিহ্নিত রাজনৈতিক দল ছাড়া সকলেই জুলাই মুক্তিযোদ্ধা: জামায়াত নেতা তাহের

নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের
নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের | ছবি: সংগৃহীত
0

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, দেশের কিছু মানুষ ও চিহ্নিত রাজনৈতিক দল ছাড়া সকলেই জুলাই মুক্তিযোদ্ধা। তাই এ বিষয়ে কোন বিভেদ সৃষ্টির সুযোগ নেই। আজ (মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট) সকাল ১০টায় মহাখালী কলেরা হাসপাতালের সামনে জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে গণমিছিল পূর্ব বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

ডা. তাহের বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর আওয়ামী-বাকশালীরা দেশে অপশাসন-দুঃশাসন চালিয়েছে। কিন্তু ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাদেরকে লজ্জাজনকভাবে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। তারা আবার দৃশ্যপটে ফিরে আসার জন্য নানাবিধ ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু বীর জনতা তাদের সে ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই সফল হতে দেবে না।’

নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘যারা নতুন করে স্বৈরাচার হওয়ার চেষ্টা করছেন তাদেরকেও জনগণ কোন ভাবেই মেনে নেবে না। তিনি দেশ ও জাতিকে নিয়ে জামায়াতের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বলেন, জামায়াত সত্য, ন্যায় ও ইসনাফ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন অব্যাহত রাখবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে জামায়াত কারো সাথে আপস করবে না বরং দেশে টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও তা রক্ষার জন্য সবকিছু করবে। দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য আগামী নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে গ্রহণ করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।’

আরও পড়ুন:

নায়েবে আমির বলেন, ‘গতানুগতির পদ্ধতির নির্বাচন দেশ ও জাতির জন্য কোন সুফল বয়ে আনবে না। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে প্রায় সকল নির্বাচনই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। বিশেষ করে ১৯৭৩ সালের নির্বাচনসহ শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচনই নির্বাচন ছিল। এসব নির্বাচনে ব্যাপক ভিত্তিক রিগিং, গণহারে সিল মারা, কেন্দ্র দখল, ডামি নির্বাচন, ব্যালট ছিনতাই, দিনের ভোট রাতে করাসহ ভোটারবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মূলত, এসব ছিল ভূয়া ও নির্বাচনের নামে প্রহসন।’

তিনি বলেন, ‘তাই দেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হলে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি তথা পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চালু করতে হবে। এ পদ্ধতি চালু হলে নির্বাচনী অপরাধ থাকবে না, ভোট চুরি ও কেন্দ্র দখল হবে না। থাকবে না টাকার খেলা। মূলত,যাদের প্রয়োজনীয় জনসমর্থন নেই তারাই এ পদ্ধতির বিরোধীতা করছেন। তারা মাস্তানি ও অর্থের বিনিময়ে নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে চান। কিন্তু জনগণ তাদেরকে সে সুযোগ দেবে না। পিআর পদ্ধতি ছাড়া অন্যকোনো পদ্ধতি তারা মেনে নেবে না।’

ডা. তাহের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, ‘জনগণের রক্তের ওপর দিয়েই জুলাই বিপ্লব সাধিত হয়েছে। তাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়েই আপনি এখন ক্ষমতায়। আপনি বা আপনার পরিবারের কোন সদস্য আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত হননি। তাই নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করার রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন ঘোষণা করলে জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল হবে। আর দেশ ও জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলে তারা আপনাকে ছাড়বে না। তাই অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় থাকতে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিতে হবে।’

অতীতের অপশাসন-দুঃশাসনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা বিএনপি-আওয়ামী লীগের শাসনামল দেখেছি। কিন্তু মানুষের মুক্তি মেলেনি। জনগণ তাদের অধিকারের নিশ্চয়তা পায়নি। আপনারা যদি আমাদেরকে এক বার সুযোগ দেন এবং আমাদের ওপর আস্থা রাখেন, তাহলে আমরা ৫৪ বছরের ইতিহাসই বদলে দেবো। দুর্নীতিবাজদের হয় দুর্নীতি ছাড়বে হবে, নয়তো জেলে যেতে হবে। আমাদের মন্ত্রী-এমপিরা শুল্কমুক্ত গাড়ি কিনবেন না বা সরকারি প্লট গ্রহণ করবেন না।’

সেজু