বয়স তখনো ৫ এর একটু বেশি। সেই সময়ই হকি-স্টিক হাতে ঘরময় ছুটে বেড়াতেন নাজমুস মাহমুদ সাবিত। স্টিকের চেয়েও কম উচ্চতা ছিল তার। পঞ্চম শ্রেণিতে ওঠার পরই মূলত স্টিক ও বলে প্রথম সংযোগ ঘটান। পুরোনো ঢাকার হকির আঁতুড়ঘর খ্যাত আরমানিটোলা স্কুলের ছাত্র সাবিত। স্কুল দলের নেতৃত্বও ছিল কাঁধে। স্কুল হকির সুবাদে খেলেছেন বিভিন্ন জেলায় জেলায়।
প্রথমবারের মতো যুব বিশ্বকাপ হকির ট্রায়ালে জায়গা করে নিয়েছেন সাবিত। দেশসেরা ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৪৪ জনের বাইরে একমাত্র খেলোয়াড় সাবিত। সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত এই তরুণ তুর্কি।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২১ হকি দলের খেলোয়াড় নাজমুস সাবিত বলেন, ‘পুরান ঢাকার ছেলে আমি। এটা আমার জন্য গর্বের। ক্যাম্পে ও টিমে থাকতে পারি সেটা চেষ্টা করবো।’
মাহমুদ পরিবারের হকির ইতিহাস বেশ পুরোনো। আশির দশকে ঘাসের মাঠ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন হাজী মোহাম্মদ সেলিম মাহমুদ। বাবা সেলিম মাহমুদকে অনুসরণ করেই হকিতে এসেছেন দুই ভাই সাকিব মাহমুদ ও নাজমুস সাবিত মাহমুদ।
২০২৩ সালে দ্বিতীয় বিভাগ হকি লিগের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়া ঢাকা ইয়াংস্টারের জার্সিতে খেলেছেন মাহমুদ পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্য সাবিত। ১২ গোল করে সাবিত ছিলেন লিগের সর্বোচ্চ স্কোরার।
ওস্তাদ ফজলু অ্যাকাডেমির ছাত্র এই সাবিত। তৃণমূল হকির জনপ্রিয় কোচ প্রয়াত মো. ফজলুল ইসলামের দীক্ষায় নিজেকে করেছেন পরিণত। ক্যাম্পে দলীয় মেলবন্ধনে দিতে চান নিজের সেরাটা।
তিনি বলেন, ‘আমার ব্যাচমেট, টিমমেট, সিনিয়ররা আমাকে উৎসাহ দিয়ে থাকে। ভালো খেলার চেষ্টা করে টিমে থাকবো।’
হকি আকাশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্রটি হতে চান সাবিত। খেলতে চান জাতীয় দলে। এই স্বপ্ন বুকে নিয়েই একটু একটু করে স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাচ্ছেন। ছেলের সাফল্যে গর্বিত বাবা।
সাবিতের বাবা মোহাম্মদ সেলিম মাহমুদ বলেন, ‘যেকোনো বাবা তার সন্তানের জন্য গর্বিত হয়। তার খেলার আগ্রহ আছে। এখন হলে ভালো নাহলে পরে আরও সময় আছে, বয়স আছে সে চেষ্টা করবে।’
ভারতের চেন্নাই ও মাদুরাই শহরে বসতে যাচ্ছে যুব হকি বিশ্বকাপের ১৪তম আসর।। বিশ্বকাপের আগে যত বেশি সম্ভব প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে নিজেদের শানিয়ে নিতে চান সাবিতরা।