আজ (মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল) দুপুরে বিলাইছড়ি ফারুয়া ইউনিয়নের গণিখাল কাটা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দীপু ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন। পরে এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপকারভোগী স্থানীয় বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় রাঙামাটি জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. আলী বাবর, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শাকিল, জেলা বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতারা ও ফারুয়া ইউনিয়ন কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় বিএনপির নেতারা রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন স্থানে খাল খনন কর্মসুচি বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠানে স্থানীয় পাংখোয়া ও তংচঙ্গ্যা শিশুরা নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও অলংকার পরিধান করে নৃত্য পরিবেশন করেন। পরে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে স্থানীয় বাসিন্দারা স্বেচ্ছাশ্রমে খাল খনন কাজে অংশ নেন।
১৯৮০ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাঙামাটি বিলাইছড়ির ফারুয়ায় গনিখাল খনন করেন। এতে কয়েক একর চাষযোগ্য জমি তৈরি হলে কয়েক হাজার পরিবারের খাদ্য সংকট দূর হয়। কিন্তু সংস্কার না হওয়া আর কয়েক বছরের বন্যা ও পাহাড় ধ্বসের কারণে খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয়দের কথা চিন্তা করে রাঙামাটি জেলা বিএনপি পুনরায় এই খান খনন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে।
এ উদ্যোগের ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। বন্যা নিয়ন্ত্রণ, ব্যবহার ও পতিত জমি চাষাবাদের জন্য সারাবছরই পানির যোগানের নিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কৃষি বাণিজ্যের হাত ধরে স্থাহানীয় অর্থনীতি সমৃদ্ধ হওয়ার প্রত্যাশা করছেন।
ফারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচবারের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান তেজেন্দ্র লাল তংচঙ্গ্যা বলেন, 'সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান পাহাড়ের মানুষকে অসম্ভব ভালোবাসতেন। পাহাড়ের মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য ১৯৮০ সালে তিনি ফারুয়ার মতো দুর্গম এলাকায় খাল খনন কর্মসুচি নিয়ে নিজে কাজে অংশ নিয়েছেন। আমি নিজে তার সঙ্গে কাজ করেছি। কিন্তু বিগত সরকারগুলো সংস্কারের উদ্যোগ না নেয়ায় খালটি বন্যা ও পাহাড় ধসের কারণে ভরাট হয়ে গেছে। ৪৫ বছর পর শহীদ জিয়ার দলের নেতারা ফারুয়ার এই খালটি পুনঃখনন শুরু করেছে। এতে এখানকার বাসিন্দারা উচ্ছ্বসিত।'
সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, 'ফারুয়ার গণিছড়া খালটি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত। ১৯৮০ সালে তিনি নিজে উপস্থিত থেকে খালটি খনন করেছিলেন। আজ দীর্ঘ ৪৫ বছর পর আজকে ফারুয়ার দুর্গম এলাকায় এসে সেই খালের স্মৃতি বিজড়িত এলাকায় পুনঃখনন কর্মসুচি শুরু করেছি। এতে এই অঞ্চলে কৃষি বাণিজ্যে ব্যাপক অগ্রগতি হবে। এতে স্থানীয় অর্থনীতিও সমৃদ্ধ হবে। আমরা পর্যায়ক্রমে জেলার বিভিন্ন স্থানে খাল খনন কর্মসুচি বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্য দিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসীর কয়েকশ একর জমি চাষাবাদের আওতায় আসবে।'
রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দীপু বলেন, 'দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার জন্য আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে এই খাল খনন কর্মসুচি প্রনয়ণ করেন। এবং তার জীবদ্দশায় এই বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদন দ্বিগুণ করে আমাদের খাদ্যাভাব দূর করেছেন। এর আগে শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে দেশ তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হয়েছিল। আমরা আবারও শহীদ জিয়ার ১৯ দফার এক দফা এই খাল খনন কর্মসুচি শুরু করেছি। এই সময়ে এটিই হচ্ছে খাল খননে বিএনপির প্রথম কর্মসুচি। যা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে।'





