আখাউড়ার সীমান্ত ঘেঁষা গ্রাম সেনারবাদী। দিনের আলো জনজীবনের কর্মব্যস্ততা স্বাভাবিক থাকলেও রাত হলেই বাড়ে আতঙ্ক। চোরাকারবারি ধরার অজুহাতে সীমানা পার হয়ে বাংলাদেশিদের হয়রানি করে বিএসএফ সদস্যরা। ছোঁড়ে ফাঁকা গুলিও।
গেল ৮ এপ্রিল বিজয়নগরের সেজামুড়া সীমান্তে বিএসএফের নির্যাতনে মুরাদুর রহমান নামে এক কৃষক নিহত হয়। পরিবারের দাবি, সীমান্তবর্তী ফসলি জমিতে কাজ করার সময় তাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে বিএসএফ।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই সীমান্তে আগ্রাসী হয়ে উঠেছে বিএসএফ।
স্থানীয়রা জানান, সীমান্তের দেড়শ' গজের মধ্যে অনেক বাংলাদেশি নিজেদের জমিতে চাষ করেন। ফলে শূন্য রেখায় তাদের আনাগোনা থাকে। জমিতে ধান পাকলেও ভয়ে ধান কাটার শ্রমিক পাচ্ছে না চাষিরা। আর মিললেও গুণতে হচ্ছে কয়েক গুণ বাড়তি মজুরি।
এলাকাবাসীরা জানান, তারা আতঙ্কে আছেন। বের হলে যদি গুলি করে সে ভয়ও রয়েছে।
তবে বিজিবির দাবি, সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের অসচেতনতা ও চোরাকারবারের কারণে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড ঘটছে। যদিও এটি বন্ধে বিএসএফকে কঠোর বার্তা দেয়ার কথা জানান এ কর্মকর্তা।
২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারাহ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে যখন ভেতরে চলে যায় তখন বিএসএফ বাধা দেয়। তো আমাদের পক্ষ থেকেও সতর্ক হতে হবে যে শূন্য লাইনটা কোনটা। আমরা বারবার বলি ১৫০ গজের ভেতর যাবেন না। ভেতরে গেলে সীমান্ত হত্যার একটা বিষয় থাকে। কিন্তু এখন আমরা বিএসএফের সাথে যেকোনো বিষয়ে কঠোরভাবে কথা বলছি।’
আর সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামাতে আগে মাদক চোরাচালান বন্ধ করা প্রয়োজন জানিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানান জেলা প্রশাসক।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, ‘স্থানীয়দের মধ্যে যারা মাদকের সাথে জড়িত তাদের জন্য বিষয়টি কনসার্নিং আর কি। কড়া নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিজিবিও তাদের কাজ করে যাচ্ছে। আশা করি দ্রুতই এ বিষয়ে আমাদের একটা সমাধান হবে।’
গেল ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী উপজেলায় বিএসএফের গুলি ও নির্যাতনে নিহত হয়েছেন ২ জন। আহত হয়েছেন আরও একজন। আখাউড়া, কসবা ও বিজয়নগরের সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত ঢুকছে মাদকসহ ভারতীয় বিভিন্ন পণ্য।