কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে ২ শিক্ষার্থী ও ১ কৃষকের মৃত্যু

ক্যামেরাবন্দি আকাশে বিদ্যুৎ চমকানোর একটি মুহূর্ত
ক্যামেরাবন্দি আকাশে বিদ্যুৎ চমকানোর একটি মুহূর্ত | ছবি: সংগৃহীত
0

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় বজ্রপাতে ২ স্কুল শিক্ষার্থী ও মিঠামইনে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। আজ (মঙ্গলবার, ৬ মে) দুপুরে প্রবল ঝড় ও বজ্রপাতের সময় এসব ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের দুজনকে উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সেখানে মৃত ঘোষণা করেন অপর একজনকে গুরুতর আশঙ্কাজনক অবস্থায় কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অপরদিকে জেলার মিঠামইন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ কৃষক কডু মিয়াকে উদ্ধার করে নিয়ে গেলে কৃষকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত শিক্ষার্থীরা হলেন, পাকুন্দিয়া উপজেলার চরটেকী গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে ইরিনা (১৫), বাদল মিয়ার মেয়ে প্রিয়া (১৫) ও বোরহান উদ্দিনের মেয়ে বর্ষা। তারা তিনজনেই চরটেকী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও সহপাঠী। অপরদিকে মিঠামইনে নিহত কডু মিয়া (৩৫) ঘাগড়া ইউনিয়নের চমকপুর দক্ষিণ হাটির মোতালেব মিয়ার ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ১২টার দিকে পাকুন্দিয়া উপজেলায় হঠাৎ ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। ওই সময় স্কুল শেষে বাড়ি ফেরার পথে চরটেকী নামাপাড়া এলাকায় পৌঁছালে বজ্রপাতের শিকার হন তিন শিক্ষার্থী। বজ্রপাতের তীব্রতায় তিনজনই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে দ্রুত পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইরিনা ও প্রিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন এবং বর্ষাকে জেলার সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. কামরুল হাসান বলেন, ‘তিনজনকে হাসপাতালে আনার পর দুজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। আহত বর্ষার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

এদিকে পাকুন্দিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাখাওয়াৎ হোসেন বজ্রপাতে শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, স্থানীয়দের সহযোগিতায় দ্রুত উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো হয়েছে।

এদিকে মিঠামইন উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, ধানের খলায় কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে আহত হন এক কৃষক। মিঠামইন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মিঠামইন থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শফিউল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বাড়ির খলায় কাজ করার সময় বজ্রপাতে একজন নিহত হয়েছেন। এদিকে পাকুন্দিয়ায় এই প্রাণঘাতী বজ্রপাতে তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় স্কুল ও পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিক্ষক, সহপাঠী ও অভিভাবকদের মাঝে নেমে এসেছে নিস্তব্ধতা ও বেদনার সুর।

এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন ও আবহাওয়াবিদরা।

এএইচ