কুমিল্লায় খাল দখল ও ভরাটের কারণে ফসলি জমিতে বাড়ছে জলাবদ্ধতা। মানুষের তৈরি এ সংকটের ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে ফসল উৎপাদন ও জনজীবনে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থায়ী প্রকল্পের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশন করা গেলে বাঁচবে কৃষক, বাড়বে ফসল উৎপাদন।
বুড়িচং উপজেলার এতবারপুর গ্রামের এ খাল দিয়ে বর্ষায় পানি চলে যেত গোমতী নদীতে। কিন্তু অবৈধ দখল ও মাটি ভরাটের কারণে সংকুচিত হয়ে গেছে খাল। পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে ফসলের মাঠে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, খালগুলো সংকুচিত হয়ে যাওয়ার কারণে একটু বৃষ্টিতেই জমি তলিয়ে যায়। ফলে জমিতে ধান চাষ করতে পারছেন না কৃষকেরা। প্রশাসনের গাফিলতির কারণে ভোগান্তিতে রয়েছেন এলাকাবাসী।
ভারতের ত্রিপুরা থেকে পাহাড়ি এলাকার বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে আসে সীমান্তঘেষা বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়ায়। ২০২৪ এ ভয়াবহ বন্যার শিকার এ দুই উপজেলার খালগুলো প্রায় বিলীন। যে কয়টি আছে তাও বিভিন্ন কলকারখানা ও প্রভাবশালীদের দখলে। আর এতে জলাবদ্ধতার মাশুল গুনছেন কৃষকরা।
আরও পড়ুন:
শুধু বুড়িচং উপজেলাতেই খাল রয়েছে ২০৩টি। অধিকাংশ খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে কৃষি ও জীববৈচিত্র্যে। সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ছাড়া স্থায়ী সমাধান সম্ভব না বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
বুড়িচং উপজেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান এটিএম মিজানুর রহমান বলেন, ‘২টি রোড় কোম্পানিগঞ্জ থেকে কুমিল্লা আসবে। মুরাদনগরের মাথায় একটি প্রকল্প নেয়া হবে। সেখানে হাতিরঝিলের মতো স্টিমার চলবে।’
বিএডিসি কুমিল্লা রিজিওন নির্বাহী প্রকৌশলী রোবায়েত ফয়সাল আল মাসুম বলেন, ‘অপরিকল্পিত বাড়ি-ঘড়, কলকারখানা, ইটের ভাটা নির্মাণ করা এর পেছনে দায়ী। উত্তরাতে যেমন বাড়ি নির্মাণে ১-২ ফুট ফাঁকা রাখার আইন আছে, তেমন আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।’
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর হোসেন বলেন, ‘খালগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা, কচুরিপানা সরানোর কাজ করা হচ্ছে। গ্রামে ড্রেনেজ সিস্টেম চালুর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
সম্প্রতি ভারি বৃষ্টি ও উজানের ঢলে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে জেলার ১৩ হাজার হেক্টর ফসলি জমিতে। খাল দখল আর অপরিকল্পিত আবাসন কৃষির পাশাপাশি বিরূপ প্রভাব ফেলছে জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা ও জীবনযাত্রায়। তাই দায়সারা কর্মসূচি নয় স্থায়ী সমাধান চান ভুক্তভোগীরা।