উদ্বোধনের পর সেতু জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হলে সেখানে মানুষের ঢল নামে। এর আগে, তিনবার পেছানোর পর চালু হয়েছে প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতু।
সেতুতে কুড়িগ্রামের সঙ্গে ঢাকার দূরত্ব কমেছে ১০০ কিলোমিটারের বেশি; যা শুধু একটি সংযোগ মাধ্যম নয় বরং একটি জনপদের মানুষের জীবনমান ও অর্থনৈতিক সচ্ছলতার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে। এতে উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতি ও যোগাযোগে আসবে যুগান্তকারী পরিবর্তন।
স্থানীয়রা জানান, এতদিন যাতায়াতে এলাকাবাসীদের ভোগান্তি পোহাতে হতো। সেতু হওয়াতে তাদের দুর্ভোগ কমে যাবে। আগে নৌকা দিয়ে তারা নদী পার হতো, এখন তারা খুব সহজেই যাতায়াত করা যাবে। পাশাপাশি পণ্য পরিবহণও করা যাবে দ্রুত।
২০২১ সালে শুরু হয় এ সেতুর নির্মাণ কাজ। ১৪৯০ মিটার এ সেতুর ২৯০টি পিলারে বসানো হয়েছে ৩১টি স্প্যান। রং, লাইটিংসহ পুরো সেতুর অবকাঠামো এখন নয়নাভিরাম। নদী শাসন, সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ। আধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মাণ করা এ সেতু তিস্তার বুকে দ্বিতীয় সেতু, যা দৈর্ঘ্যে সব থেকে বড় বলছেন প্রকৌশলীরা।
গাইবান্ধা নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, ‘ব্রিজের সবগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন ম্যানুয়ালি করা হয়েছে। গুণগতমান বজায় রেখে কাজটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এটি এখন ইকোনমিক হাব হিসাবে কাজ করবে। গাইবান্ধা-কুড়িগ্রামবাসীর যোগাযোগব্যবস্থা আরও সহজ হবে।’
এদিন বেলা ১২টার পর এসে পৌঁছান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া। পরে উদ্বোধন করেন মওলানা ভাসানী সেতু।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘উত্তর অঞ্চলের মানুষ সব থেকে বেশি বৈষম্যর শিকার হয়েছে। আজ স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলেও আমরা তিস্তাসহ সীমান্তবর্তী এবং ভারতের সঙ্গে যেই নদীগুলো আমরা শেয়ার করি, সেই নদীগুলোর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারিনি।’
৮৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক, নদী শাসন, কালভার্ট ও জমি অধিগ্রহণসহ সম্পূর্ণ সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭৩০ কোটি টাকা। এলজিইডির তত্ত্বাবধানে চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ার কর্পোরেশন কাজটি বাস্তবায়ন করেছে। যার অর্থায়ন করেছে সৌদি সরকার।