এ ঘটনায় গত শনিবার (২৬ জুলাই) ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় ‘হত্যার উদ্দেশে বাড়িতে ঢুকে মারপিট, গুরুতর জখম ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে একটি মামলা করেন কাশেম মিয়া।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে তার নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছোট বোনকে (১৩) ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে তার (ভুক্তভোগী) ভাই হাসিবুল বাদী হয়ে একটি মামলা করেন কোতয়ালী থানায়।
২০১৫ সালের ১৭ নভেম্বর ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) আবদুর রহমান সরদার চারজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
তবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বাবুল হোসেনকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। মামলা করার পর থেকেই আসামি বাবুল বাদী এবং তার পরিবারকে জীবননাশের হুমকি দিয়ে আসছিল।
এজাহারে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টায় কাশেম মিয়া তার স্ত্রী লাকি খাতুন (৩৫) ও তার দুই মেয়ে মুসলিমা আক্তার (১৩) ও খাদিজা (৩) পাশাপাশি দুই কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। দিবাগত রাত ২টার দিকে আসামি বাবুলের নেতৃত্বে কয়েকজন তাদের ঘরের মাটির ভিত খুঁড়ে ভিতরে ঢুকে তাকে ও তার স্ত্রীর মাথাসহ বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। পরে তাদের বড় মেয়ের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা তাদের ‘প্রাণে মেরে ফেলার’ হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।
বর্তমানে কাশেম মিয়া ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং তার স্ত্রী লাকি খাতুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মামলার পর তিনদিনেও এ মামলার প্রধান আসামি বাবুল গ্রেপ্তার না হওয়ায় গত মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) পুলিশ সুপারের কাছে বিচারের দাবিতে একটি মানবিক আবেদন করেন কাশেমের আরেক ভাই শহিদুল ইসলাম।
ওই আবেদনে শহিদুল ইসলাম জানান, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি বাবুল হোসেন ‘তোদেরকে হত্যার জন্য এক কোটি টাকা রেখেছি’— বলে এলাকায় প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ অবস্থায় তাদের পরিবার বর্তমানে চরম আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কাশেম মিয়ার দায়ের করা মামলায় বাবুল হোসেন, রিয়াজ মিয়া (২৫) ও মো. হাসানকে (৪০) আসামি করা হয়। এর মধ্যে, রিয়াজকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বাকি দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’