শাকসু নির্বাচন ঘিরে ২৭ বছর পর আশার আলো, কিন্তু বিতর্ক কমেনি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ছবি
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ছবি | ছবি: এখন টিভি
0

দীর্ঘ ২৭ বছরেও হয়নি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (শাকসু) নির্বাচন, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে জন্ম দিয়েছে গভীর আক্ষেপ। তবে সাম্প্রতিক আন্দোলন ও দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রবিধি পুনঃপ্রণয়ন কমিটি গঠন করায় শাকসু নির্বাচন নিয়ে আবারও আশার আলো দেখছেন শিক্ষার্থীরা। যদিও নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে রয়েছে বিতর্ক, তবু নির্বাচনের অপেক্ষায় পুরো ক্যাম্পাস।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাত্র পাঁচবার অনুষ্ঠিত হয়েছে শাকসু নির্বাচন। সর্বশেষ নির্বাচনটি হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। দীর্ঘ সময়েও নির্বাচন না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের যেন আক্ষেপের শেষ নেই।

গণঅভ্যুত্থানে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির অন্যতম ছিল শাকসু নির্বাচন। গণতন্ত্র চর্চা, রাজনৈতিক সচেতনতা ও নেতৃত্ব বিকাশের লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাকসু নির্বাচনের দাবি তোলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে শাকসু নির্বাচনের লক্ষ্যে চলতি মাসের ১৩ জুলাই গঠিত হয় আট সদস্যবিশিষ্ট প্রবিধি পুনঃপ্রণয়ন কমিটি। এতে কিছুটা স্বস্তি এলেও, কমিটি গঠনের পদ্ধতি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদের।

শাবিপ্রবি ছাত্রদলের সভাপতি রাহাত জামান বলেন, ‘শাকসু নিয়ে এত কথা হচ্ছে, কিন্তু এখনও ছাত্রদলকে কেউ ইনভাইট করেনি এবং তারা প্রশাসনের সঙ্গে আলাদাভাবে বসে শাকসু নিয়ে কথা বলছে। প্রশাসন কোনো একটি সংগঠনকে আলাদাভাবে প্রায়োরিটি দিচ্ছে কি না সেটা ভেবে দেখার বিষয়।’

ছাত্রশিবিরের দপ্তর সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সবার প্রাণের দাবি যে, শাকসু আবার নতুন করে গঠন হবে, এর জন্য গতকাল একটি কমিটি হয়েছে, আমরা দেখেছি। আশা করি ছাত্রদের দাবি আদায় হবে। ছাত্রশিবিরও সবসময় দাবি জানিয়ে আসছে এবং আমরা সবসময় চাই শিক্ষার্থীদের কথা শুনে, তাদের জন্য কাজ করতে।’

বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সংগঠক ইসমাইল কারজাবি বলেন, ‘ছাত্রসংসদ নির্বাচনটা আসলে ক্যাম্পাসে যারা অংশীজন আছে, ক্লাবগুলো হোক বা একজন ব্যক্তি হোক তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আগানো উচিত।’

বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বলছেন, সকল অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচন আয়োজন করতে চান তারা ।

শাবপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘শাকসুর প্রবিধিগুলো দেখার জন্য একটা কমিটি করে দেয়া হয়েছে। তারা এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। তারা স্টেকহোল্ডার ও আমাদের ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলবে। এরপর নিয়ম-কানুনগুলো সব দেখে সুন্দর একটা সাজেশন দেবে। এরপর আমরা শাকসু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে পারবো।’

দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সুষ্ঠ ও অংশগ্রহণমূলক শাকসু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাস ফিরে পাবে তার নতুন নেতৃত্ব আর গণতন্ত্র চর্চার নতুন অধ্যায় এমনটাই প্রত্যাশা শিক্ষার্থীদের।

এসএইচ