চলনবিল দেশের বৃহত্তম উন্মুক্ত জলাশয়। পানি এক সময় চলমান থাকায় নাম হয়েছিল চলনবিল। পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জজুড়ে বিস্তৃত এই বিলজুড়ে এখন টলমলে পানি থাকার কথা থাকলেও, বাস্তবতা বলছে ভিন্ন চিত্র।
গতবছর যেখানে দুই থেকে তিন ফুট পানি ছিল।যেখানে হাঁসের জলকেলি আর কৃষক ধরেছেন মাছ। সেখানে এবার সেই বিলেই গরুকে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে এসেছে কৃষক।
এক জেলে বলেন, ‘শুকনার কারণে মাছ মরে গেছে। ক্ষতি তো হইছেই। পানি যদি ভরে থাকতো তাহলে মাছগুলো বেঁচে থাকতো।’
অন্য এক কৃষক বলেন, ‘বন্যা না হলে আমার এলাকায় সমস্যাই। জমিগুলো ডুবে থাকলে। ফসল উর্বর হয়।’
আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘আমাদের এলাকা থৈ থৈ করে পানিতে। এখন পানি ছাড়া মরুভূমি লাগে। বৃষ্টিও নাই পানিও নেই।’
তিন জেলার সমন্বয়ে ৬২ বর্গকিলোমিটারের চলনবিলে মাছ শিকার করে জীবন চলে হাজারো জেলে ও সাধারণ মানুষের। মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, উন্মুক্ত এই জলাশয় থেকে প্রতিবছর মাছ উৎপাদন হয় অন্তত ২০ হাজার মেট্রিক টন। তবে এ বছর বিলে মা মাছ ডিম ছাড়ার আগে ও পরে পর্যাপ্ত পানি না আসায় ছোট অবস্থাতেই মারা গেছে অনেক মাছ।
এলাকার বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘চলনবিলে পানি নেই, যার কারণে মাছ বড় হতে পারেনি। আমরা মাছ পাচ্ছি না এজন্য।’
আরেকজন বলেন, ‘ছোট মাছ ধরা জাতির জন্য ক্ষতিকর। এটা দেখভালের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
বর্ষাকালে প্রতিবছর হাজারো পর্যটকদের আগমনে মুখর থাকে বিলটি। তবে পর্যাপ্ত পানি না আসায় পর্যটক সংকটে অলস সময় পার করছে ছোট-বড় নৌকা।
মাঝিদের একজন বলেন, ‘আমাদের দিনে দু’একশো টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। কোনো সময় খালি নৌকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। লোকজন নাই পয়সা পাতি কামাইনি।’
মাঝিদের আরেকজন বলেন, ‘পানি অল্প দেখে লোকজনও আর আসে না।’
চলনবিলে পানি প্রবেশ করে নদী আর উজানের ঢলের মাধ্যমে। কিন্তু এবার আগেই বর্ষা আসায়, ছিল না পানির স্থায়িত্ব। এতে দ্রুত নেমে যায় বিলের পানি।