প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভরশীল দেশের অর্থনীতি। তাও জাতীয় নির্বাচনে ভোটদানের মতো মৌলিক অধিকার থেকেই বঞ্চিত প্রায় দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি।
হাজারো কষ্ট সয়ে দূর পরবাসেও দেশকে লালন করা বাংলাদেশি রেমিট্যান্স যোদ্ধারা অংশ নিতে পারেন না দেশের ভবিষ্যৎ গড়ার সিদ্ধান্তে। সংবিধান সকল নাগরিকের ভোটাধিকার নিশ্চিত করলেও, প্রবাসীদের সে অধিকার কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরে এসে হলেও নিজ দেশে ভোটাধিকারের দাবি যুক্তরাজ্য-প্রবাসী বাংলাদেশিদের।
এক প্রবাসী জানান, আমার যে ভোটাধিকার নেই এ জিনিসটা মানিয়ে নেয়া একটু কষ্টকর লাগে।
বিদ্যমান আইনে প্রবাসীদের পোস্টাল ব্যালটে ভোটাধিকার থাকলেও, অর্ধশতকের কোনো নির্বাচনে সেটির প্রয়োগ হয়নি। নির্বাচন কমিশন বলছে, পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোট নিশ্চিত করা অন্যতম লক্ষ্য।
তবে কোন পদ্ধতিতে ভোট নেয়া হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। পোস্টাল ব্যালট সময়সাপেক্ষ আর অনলাইন ভোটিং অজনপ্রিয় বলে বিবেচনায় রয়েছে ‘প্রক্সি ভোটিং’। এ পদ্ধতিতে সঠিকভাবে মতের প্রতিফলন নাও ঘটতে পারে বলে শঙ্কা, যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি কমিউনিটির।
যুক্তরাজ্যে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের রহমত আলী বলেন, ‘তারা প্রক্সি ভোটের ব্যাপারে বলছেন যে, প্রবাসী একজনকে মনোনীত করবেন। এবং মনোনীত ব্যক্তির মাধ্যমে প্রবাসী তার ভোট দেবেন। কিন্তু এটাও নিশ্চিত নয়। আমার ভোটাধিকার যে মনোনীত ব্যক্তিকে দেয়া হয়েছে সেটা আমি পুরোপুরিভাবে আশ্বস্ত হতে পারছি না। এজন্য এটাকেও আমরা গ্রহণ করতে পারছি না।’
প্রবাসীদের দাবির মুখে ২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর তৎকালীন নির্বাচন কমিশন প্রথমবার প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিয়ে উদ্যোগী হয়। যদিও সেসব উদ্যোগও বেশিদূর এগোয়নি। কারণ হিসেবে রাজনৈতিক স্বদিচ্ছার অভাবকেই দায়ী করছেন কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ।
২০২৪ সালে প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রায় ২৭শ' কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠান। প্রবাসী আয়ের তালিকায় বিশ্বে সপ্তম শীর্ষ অবস্থানে বাংলাদেশ। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভোটাধিকার নিশ্চিতের দাবি প্রবাসীদের।
আগামী নির্বাচনের আগেই ভোটাধিকার নিশ্চিতে কাজ শুরু হবে এমনটাই প্রত্যাশা প্রবাসীদের।