সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-বাংলাদেশের কূটনীতিতে আলোচনায় ছিলো পুশ ইন-পুশ ব্যাক ইস্যু। অনুপ্রবেশকারী আখ্যা দিয়ে বেশ কয়েকমাস ধরে মুসলিমদের বাংলাদেশে বিতাড়িত করার কার্যক্রম চালাচ্ছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। বিপরীতে তাদের আটক করে আবারও ভারতে পাঠায় বাংলাদেশ।
তবে জোরপূর্বক বিতাড়িত করা ব্যক্তিদের অধিকাংশই ছিলেন ভারতীয় নাগরিক। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই তথ্য। বিজিবির বরাতে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ৭ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশে বিতাড়িত করা হয় অন্তত ১ হাজার ৫শ' মুসলিম নারী, পুরুষ ও শিশুকে। যার মধ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছেন ১০০ জন। এসময় মারধরের পাশাপাশি অনেকের নাগরিকত্বের সনদ নষ্ট করা হয়। ভুক্তভোগীদের অধিকাংশই পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা ও গুজরাটের দরিদ্র অভিবাসী শ্রমিক।
নিউইয়র্কভিত্তিক সংস্থাটির দাবি, গেলো এপ্রিলে জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর শুরু হয় মুসলিমদের ওপর নির্যাতন। বিজেপি শাসিত বেশ কয়েকটি রাজ্যের অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে বিতাড়িত করতে ৩০ দিনের সময় বেঁধে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। যার পরেই শুরু হয় ব্যাপক ধরপাকড়। আগামী বছর বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা থাকায় রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য অনুপ্রবেশকারী আখ্যা দিয়ে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার।
বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক মনোভাব উসকে দেয়ার অভিযোগ তুলেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারসংক্রান্ত চুক্তি এবং জাতিগত বৈষম্য বিলোপ সনদের আওতায় সবার অধিকার রক্ষার প্রতি দায়বদ্ধ ভারত। বিতাড়নকে বেআইনি আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে নয়াদিল্লীকে প্রক্রিয়া বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
গত ৮ মে পুশইনকে অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক চিঠিতে ভারত সরকারকে জানায়, শুধুমাত্র নাগরিকত্ব প্রমাণ সাপেক্ষে অভিবাসীদের গ্রহণ করবে ঢাকা। পাশাপাশি যথাযথ কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে প্রত্যাবাসন।