গাজায় অনাহার ও অপুষ্টিতে ২৩৫ জনের প্রাণহানি

গাজায় ইসরাইলি হামলায় বাড়ছে নিহতের সংখ্যা
গাজায় ইসরাইলি হামলায় বাড়ছে নিহতের সংখ্যা | ছবি: সংগৃহীত
0

ইসরাইলি আগ্রাসনে বুধবার (১২ আগস্ট) গাজায় ৩৩ ত্রাণ প্রত্যাশীসহ প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১০০ ফিলিস্তিনি। আজ (বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট) সকাল থেকে আরও ১৬ জনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। যুদ্ধ শুরুর পর অনাহার ও অপুষ্টিতে প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩৫ জনে।

এমন পরিস্থিতিতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে জীবনরক্ষাকারী ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেয়ার অভিযোগ বিশ্বের ১০০টিরও বেশি মানবিক সংস্থার। এদিকে, প্রতিবেশী ৬ রাষ্ট্র নিয়ে গ্রেটার ইসরাইল তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে নেতানিয়াহুর মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব।

ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এখন ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক। এতে, বিশ্ববাসীর নজরের বাইরে চলে গেছে গাজা যুদ্ধ। আর এ সুযোগটিকেই কাজে লাগিয়ে উপত্যকায় আগ্রাসনের মাত্রা বাড়িয়েছে ইসরাইল।

বুধবার (১২ আগস্ট) দিনভর হামলায় উপত্যকায় প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১০০ ফিলিস্তিনি। সম্প্রতি সম্পূর্ণরূপে দখলকৃত গাজা সিটিতেই প্রাণহানি ছাড়িয়েছে অর্ধশতাধিক। বুলেট-বোমার পাশাপাশি নীরব ঘাতক হিসেবে প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে ক্ষুধা। অপুষ্টি আর অনাহারে এরইমধ্যে প্রাণহানি আড়াইশো ছুঁইছুঁই। যার মধ্যে শতাধিকই শিশু। উপত্যকায় ত্রাণ প্রবেশেও আরোপ করা হয়েছে বাড়তি কড়াকড়ি ও নিষেধাজ্ঞা।

এমন পরিস্থিতিতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে জীবন রক্ষাকারী ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেয়ার অভিযোগ এনেছে বিশ্বের ১০০টিরও বেশি মানবিক সংস্থা। নেতানিয়াহু প্রশাসনের বিরুদ্ধে ত্রাণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগে এনে যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছে সংস্থাগুলো। তাদের দাবি, কেবল জুলাই মাসেই ৬০ বার ত্রাণ সরবরাহের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে তেল আবিব। তবে গাজায় ত্রাণ সরবরাহের ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়ার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে ইসরাইলি সরকার।

আরও পড়ুন:

গাজা সিটি দখলের পর গোটা উপত্যকা দখলের স্বপ্নে বিভোর এখন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। ফিলিস্তিনের পাশাপাশি জর্ডান, সিরিয়া, লেবানন, মিশর, ইরাক ও সৌদি আরব নিয়ে গ্রেটার ইসরাইল তৈরির পরিকল্পনার সঙ্গে আত্মিক সংযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। ইতোমধ্যেই নেতানিয়াহুর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সৌদি সরকার। সমালোচনা চলছে খোদ ইসরাইলেও।

আইডিএফের সাবেক ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ মাতান ভিলনাই বলেন, গাজা দখল করে আপনি কোনো কিছুই অর্জন করতে পারবেন না। আমি বেশ কয়েকবছর গাজার গভর্নর ছিলাম। গাজা পরিচালনার অর্থ কী, সেটা আমি জানি। এতে বিপুল অর্থ খরচ করতে হয়। কারণ ২০ লাখ ফিলিস্তিনের দায়িত্ব আপনার হাতে।

এদিকে, গাজায় আল জাজিরার সাংবাদিককে হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভ করেছেন খোদ ইসরাইলিরা। ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে বুধবার তেল আবিবে কয়েকশ সাংবাদিক বিক্ষোভে অংশ নেন। এসময় অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে নেতানিয়াহু সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

বিক্ষোভকারী সাংবাদিকরা বলেন, ‘গাজার সাংবাদিকদের বিষয়ে উদ্বিগ্ন ইসরাইলি সাংবাদিকরা। এই বার্তা দিতে এসেছি। আমরা যুদ্ধের সমাপ্তি চাই। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে সব সাংবাদিকরা উদ্বিগ্ন।’

গাজার সাংবাদিকদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ জার্নালিস্ট। লন্ডনের ব্যস্ত সড়কে ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানায় লন্ডনবাসী।

ইএ