বিশ্বের ৭০টি দেশ ও অঞ্চলের ওপর ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ কার্যকর হয়েছে এক সপ্তাহ হলো। এরইমধ্যে চাঙাভাব বিরাজ করছে মার্কিন শেয়ার বাজারে। সবগুলো সূচকই ঊর্ধ্বমুখী। তবে বিপাকে পড়েছে বেশকিছু বাণিজ্যিক অংশীদার দেশ।
৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার এক সপ্তাহ পরই ব্রাজিলের সামুদ্রিক খাবারের রপ্তানিখাত স্থবির হয়ে পড়েছে। মাছ ধরার নৌকাগুলো তীরে দাঁড়িয়ে আছে। কাজ নেই জেলেদের। যুক্তরাষ্ট্রের ক্রয়াদেশ নেমে এসেছে অর্ধেকে। একসময়ের ব্যস্ততম প্রক্রিয়াকরণ কারখানার যন্ত্রপাতিগুলো অলস পড়ে আছে।
মার্কিন শুল্কে ক্ষতিগ্রস্ত রপ্তানিকারকদের জন্য একটি সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ব্রাজিল সরকার। তাদের জন্য সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ তহবিল গঠন করা হয়েছে। নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করে প্রেসিডেন্ট জানান, শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে ব্রাজিল।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা বলেন, ‘রপ্তানি গ্যারান্টি তহবিলের পাশাপাশি রপ্তানি কার্যক্রম ও বীমা সহায়তা দেয়া হচ্ছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের রপ্তানিকারকদের পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। রপ্তানিতে আগ্রহী করতে নতুন বাজারের সন্ধান করছে ব্রাজিল।’
৩০ শতাংশ মার্কিন শুল্ক দক্ষিণ আফ্রিকার মোটরগাড়ি শিল্পকে অনিশ্চয়তায় ফেলে দিয়েছে। গেল দুই বছর ধরে চাকরি হারানো ও কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে ছিল এই খাতের জড়িত কর্মীরা। গাড়ি শিল্পে জড়িত আছে দেশটি ১ লাখের বেশি মানুষ। এদের মধ্যে শুধু যন্ত্রাংশ তৈরিতে নিযুক্ত ৮০ হাজার মানুষ।
৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত শুল্কের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ৫ দফা প্রস্তাব পেশ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার। যার মধ্যে অন্যতম যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অব্যাহত যোগাযোগ, বিকল্প বাজার খোঁজ করা, ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানি ও কর্মীদের সহায়তা করা।
দক্ষিণ আফ্রিকার ডিপার্টমেন্ট অব ট্রেডের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল এমলুম্বি পিটার বলেন, ‘আমরা সক্রিয়ভাবে বাজারের দিকে নজর রাখছি। কেবল মার্কিন শুল্কের প্রতিক্রিয়া নয়, একটি স্থিতিশীল বাজার তৈরিতে কৌশলগতভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। আফ্রিকান মহাদেশীয় বাজারে ২৭ শতাংশ পণ্য রপ্তানি করে দক্ষিণ আফ্রিকা।’
ভারতীয় পণ্যে ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্কারোপের হুমকির বিরুদ্ধে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভে নেমেছে শত শত মানুষ। কৃষক, শ্রমিক ও ছাত্ররা বেশ কয়েকটি ট্রেড ইউনিয়নের ব্যানারে আন্দোলনে নামে। মার্কিন শুল্ক হুমকি প্রত্যাখ্যানের দাবি জানান তারা।
এদিকে, ৩৯ শতাংশ শুল্কের চাপে বিরূপ প্রভাব পড়েছে সুইজারল্যান্ডের রপ্তানি খাতে। বিশেষ করে যন্ত্রপাতি, পনির, চকলেট ও বিলাসবহুল ঘড়ির প্রতিষ্ঠানগুলো। সুইস ঘড়ির তিনভাগের এক অংশের ক্রেতা যুক্তরাষ্ট্র। এখন শুল্কের বোঝায় চাকরি হারানোর শঙ্কায় পড়েছে ঘড়ি শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা।