নেতানিয়াহুর বিরোধিতা সত্ত্বেও ইসরাইলি সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার বিল অনুমোদন নেসেটের

ইসরাইলি  পার্লামেন্ট (নেসেট)
ইসরাইলি পার্লামেন্ট (নেসেট) | ছবি: সংগৃহীত
0

ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার বিষয়ে একটি বিলে প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে ইসরাইলি পার্লামেন্ট নেসেট। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও কিছু দলের সদস্যের বিরোধিতার মধ্যেও বিলটি পাস হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, পশ্চিম তীরের অধিগ্রহণ গাজা শান্তিচুক্তিকে হুমকির মুখে ফেলবে। হামাস ও আরব রাষ্ট্রের সদস্যরাও এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত জানিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের জন্য কাজ করা জাতিসংঘ সদস্যরা হামাস বা অন্য কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর অংশ নয়, তবে ইসরাইল এই রায় প্রত্যাখ্যান করেছে।

ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীর আনুষ্ঠানিকভাবে দখলের পথে হাঁটছে ইসরাইল। এরই মধ্যে ইসরাইলি পার্লামেন্ট নেসেট দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে। ১২০ আসনের পার্লামেন্টে ২৫-২৪ ভোটে বিলটি প্রাথমিক অনুমোদন পায়। তবে বিলটি পাস হতে আরও তিন ধাপের অনুমোদনের প্রয়োজন।

নেসেটের এক বিবৃতিতে বলা হয়, পশ্চিম তীরের জুদিয়া ও সামারিয়া অঞ্চলে ইসরাইল রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য বিলটি প্রাথমিকভাবে অনুমোদিত হয়েছে। এখন বিষয়টি আরও আলোচনার জন্য নেসেটের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা কমিটিতে পাঠানো হবে। বিলটি পাস হলে ইসরাইল দখলকৃত পশ্চিম তীরের ওপর পূর্ণ কর্তৃত্ব দাবি করতে পারবে।

পশ্চিম তীর সংযুক্ত করার বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন দেশটির অতি ডানপন্থি নোয়াম পার্টির নেতা আভি মাওজ। প্রধানমন্ত্রী বেনিইয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার লিকুদ পার্টি বিলটির বিরোধিতা করলেও তার জোটের কয়েকজন সদস্য এর পক্ষে ভোট দেন।

এদিকে পশ্চিম তীরকে ইসরাইলি ভূখণ্ডে সংযুক্ত করার সিদ্ধান্ত চলমান গাজা শান্তিচুক্তিকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের বিষয়ে আলোচনা করতে ইসরাইল সফরে গিয়ে একথা বলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, এটা নেসেটের ভোট। কিন্তু আমার মনে হয় রাষ্ট্রপতি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে এমন কিছু আমরা এখনই সমর্থন করব না এবং আমরা মনে করি এটি শান্তি চুক্তির জন্য হুমকিস্বরূপ। তারা গণতান্ত্রিক ভূখণ্ড, তাদের ভোট থাকবে। মানুষ এই অবস্থানগুলি গ্রহণ করবে। কিন্তু এই সময়ে, আমরা মনে করি এটি বিপরীতমুখী হতে পারে।

আরও পড়ুন:

তেল আবিবের পশ্চিম তীরের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার বিষয়টির নিন্দা জানিয়েছে কাতার, সৌদি আরব ও জর্ডান। আরব রাষ্ট্রগুলো বলেছে, এই সিদ্ধান্ত দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের ভিত্তিকে ধ্বংস করবে। ইসরাইলের এমন কার্যক্রম আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।

এছাড়া ইসরাইল গাজায় ত্রাণ প্রবেশ আটকে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করছে গোষ্ঠীটি। জাতিসংঘও জানিয়েছে গাজায় ত্রাণ প্রবেশের জন্য রাফাহ ক্রসিংসহ বিভিন্ন সীমান্ত খুলে দেয়া উচিত ইসরাইলের।

তবে নানা সংকটের মধ্যেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো গাজা থেকে ৪১ জন গুরুতর রোগী এবং তাদের ১৪৫ জন পরিবারের সদস্যকে চিকিৎসার জন্য সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এদিকে গাজায় মানবিক সহায়তা দিতে ইসরাইল বাধ্য বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। পাশাপাশি ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সাহায্যকারী জাতিসংঘের ইউএন-র সংস্থার সদস্যরা কোনোভাবে হামাস বা অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য নয় বলেও রায় দিয়েছে আইসিজে। এই রায়কে রাজনৈতিক মন্তব্য করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে তেল আবিব। এর আগে ইউএন-র এর সদস্যদের একাংশ হামাসকে সহায়তা করছে দাবি করে সংস্থাটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ইসরাইল।

ইএ