দক্ষিণ ইউরোপে স্মরণকালের ভয়াবহ তাপপ্রবাহ, প্রাণহানি বাড়ছে

ইউরোপে বেড়েছে তাপমাত্রা
ইউরোপে বেড়েছে তাপমাত্রা | ছবি: সংগৃহীত
0

স্মরণকালের ভয়াবহ তাপপ্রবাহে অতিষ্ট ইউরোপীয়দের জনজীবন। চলতি সপ্তাহে দক্ষিণ ইউরোপে গড় তাপমাত্রার চেয়ে ১০ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। অত্যাধিক তাপপ্রবাহে বাড়ছে প্রাণহানি। এমন পরিস্থিতিতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

গ্রীষ্মকালে সানবাথের জন্য পরিচিত ইউরোপের সমুদ্র সৈকত। তবে এবারের চিত্র অনেকটাই ভিন্ন। স্মরণকালের ভয়াবহ তাপপ্রবাহে অতিষ্ট ইউরোপীয়দের জনজীবন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে দক্ষিণ ইউরোপের বাসিন্দারা। তাই সূর্যাস্তের সময় ছাড়া সৈকতের আশপাশে জনসমাগম তুলনামূলক কম।

ফ্রান্স, স্পেন ও পর্তুগালের অধিকাংশ এলাকায় কয়েক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলতি সপ্তাহে ইউরোপে আবারও তৈরি হতে পারে একটি বিশালাকৃতির হিট ডোম বা তাপবলয়। হাই প্রেশার সিস্টেমের কারণে পশ্চিমের যুক্তরাজ্য থেকে পূর্বের পোল্যান্ড পর্যন্ত গড় তাপমাত্রার চেয়ে ১০ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে স্মরণকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দেখতে পারে বেশ কয়েকটি দেশ।

ইউনিভার্সিটি অফ এক্সেটারের অধ্যাপক রাফায়েল হেয়উড বলেন, ‘কিছু কিছু স্থানে তাপমাত্রা প্রায় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আগামী ২০ বছরের মধ্যে এটি আমাদের জন্য স্বাভাবিক তাপমাত্রা হয়ে দাঁড়াবে। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে এখনই কোনো পদক্ষেপ না নিলে চলতি শতাব্দী শেষে আর করার মতো কিছুই থাকবে না।’

আবহাওয়ার এমন অস্বাভাবিক আচরণের পেছনে মানুষকে দায়ী করছেন জলবায়ু বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের কারণে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ছে গ্রিন হাউজ গ্যাস। এতেই উষ্ণ হয়ে উঠছে বায়ুমণ্ডল।

গেল মাসে ইতিহাসের তৃতীয় উষ্ণতম জুলাই দেখেছে বিশ্ব। ভূপৃষ্ঠের পাশাপাশি অত্যাধিক উষ্ণ হয়ে উঠছে সমুদ্রপৃষ্ঠ। কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণের কারণে সমুদ্রে বাড়ছে অম্ল বা অ্যাসিডের পরিমাণ। এতে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের পাশাপাশি মানুষের দেহে বাসা বাঁধছে বিরল রোগ।

রাফায়েল হেয়উড বলেন, ‘সমুদ্র যত কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে, তত বেশি অম্লীয় হয়ে পড়ছে। এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রে। অতিরিক্ত তাপ শোষণের কারণে সামুদ্রিক প্রাণীদের পাশাপাশি মানুষও ক্ষতির শিকার হচ্ছে।’

ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষণা বলছে, গেলো ২৩ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত ইউরোপের ১২টি শহরে তাপপ্রবাহের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৩শর বেশি মানুষ। যার মধ্যে দেড় হাজার মৃত্যু জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত। এমন পরিস্থিতিতে জীবাশ্ম জ্বালানির বদলে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

এসএস