শপথ নেয়ার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়রের দায়িত্ব নেবেন না ইশরাক

ইশরাক হোসেন
ইশরাক হোসেন | ছবি: এখন টিভি
0

মেয়র হিসেবে গতকাল (সোমবার, ১৬ জুন) নগর ভবনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠকের পরদিনই বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন জানালেন, শপথ নেয়ার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেবেন না তিনি। আজ (মঙ্গলবার, ১৭ জুন) সকালে নগর ভবনের সামনে সমর্থকদের অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে তিনি স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে দুদকের প্রতি আহ্বান জানান।

সোমবার নগর ভবনের কনফারেন্স রুমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। যা ছিল নগরভবনে তার প্রথম সভা। সেই সভার ব্যানারে ইশরাক হোসেনের নামের সঙ্গে লেখা ছিল ‘মাননীয় মেয়র’।

এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনার ঝড় ওঠে। ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব দেয়ার দাবিতে ঈদের আগে টানা ১৮ দিন ও ঈদের পর আবারও আন্দোলনে তার সমর্থকরা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে নিজেকে জনতার মেয়র হিসেবেও ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।

মঙ্গলবারও মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখে ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল এসে জড়ো হতে থাকে নগর ভবনে। এসময় তারা তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পদত্যাগ দাবি করেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এখন যারা আছে তারা বাণিজ্য করছে। তারা অল্প পানির মাছ বেশি পানিতে পড়ে গেছে। এই নগরভবনে ইশরাককে বসিয়ে দিয়ে অফিস করার জন্য আমরা আন্দোলনে নামছি।’

বেলা ১২টার দিকে নগর ভবনে আসেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। এসময় তিনি গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। পরে সোমবারের সভা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইশরাক হোসেন জানান, শপথ পাঠ না করানো পর্যন্ত মেয়র হিসাবে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পালন করবেন না।

ইশরাক হোসেন বলেন, ‘প্রথমে জরুরি সেবা এবং পরবর্তীতে আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে দৈনন্দিন সেবা অর্থ জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সার্টিফিকেটের বিষয়গুলো যেন চলমান থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য পর্যায়ক্রমে এর সঙ্গে যারা যুক্ত রয়েছে তাদের সঙ্গে বৈঠক করে আমরা দিকনির্দেশনা দিচ্ছি। এটি আমি করছি। কিন্তু অফিসিয়ালি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার জন্য স্থানীয় সরকার আইন-২০০৯ এবং বিধিমালা-২০১০ অনুযায়ী অবশ্যই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করতে হবে। বিশ্বাস করেন, যদি ওইটা না থাকতো তাহলে এতদিনে মেয়রের পদ আমি নিয়ে বসে থাকতাম।’

এসময় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেন ইশরাক হোসেন। এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুদদকে আহ্বান জানান তিনি।

ইশরাক হোসেন বলেন, ‘মূলত স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা রাজনৈতিক ও আর্থিক অন্যায়ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য তার পছন্দের একজন ব্যক্তিকে প্রশাসক নিয়োগ করে আর্থিক ও রাজনৈতিকভাবে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছেন। আমি দুর্নীতি দমন কমিশনকে আহ্বান জানাতে চাই আপনারা এখানে আসুন এখানে যতদিন আসিফ মাহমুদ অফিস করেছে কী কী দুর্নীতি করে গিয়েছে তার সককিছু আপনারা তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।’

সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন থামবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন ইশরাক হোসেন।

এসএস