নির্যাতনের আঘাত আর মিথ্যা মামলার অপবাদ নিয়ে ১৭ বছর আগে দেশ ছেড়েছিলেন যিনি, তিনিই এখন রাজনীতিতে এক আলোচিত ব্যক্তিত্ব। যার নেতৃত্বের অপেক্ষায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে এসময়ে আসতে পাড়ি দিতে হয়েছে দীর্ঘপথ।
১/১১ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মইনুল রোডের বাসা থেকে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমানকে। এরপর অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। ওই বছর ২৮ নভেম্বর আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে নিপীড়নের বর্ণনা তুলে ধরেছিলেন তিনি।
রিমান্ড, নির্যাতন, ৫৫৪ দিন বা ১৮ মাস কারাভোগের পর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান তারেক রহমান। লন্ডনে যাওয়ার পরও তার ওপর থামেনি মামলার খড়গ। সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ১৩টি এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে ৭২টি মামলা হয়। এর মধ্যে অন্তত পাঁচটি মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদ সাজা দেয়া হয় তাকে। এমনকি গণমাধ্যমেও তার বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞাও দেয়া হয় আদালতের মাধ্যমে।
আরও পড়ুন:
এতকিছুর মধ্যেও সংগ্রাম চালিয়ে যান তারেক রহমান। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সাজানো মামলায় কারাগারে বন্দি করার পর হাল ধরেন বিএনপির।
সুদূর লন্ডনে থেকেই পরিচালনা করেন সংগঠন। ওয়ার্ড থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়ালই রক্ষা করে গেছেন যোগাযোগ। এরই মধ্যে তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ ও উজ্জীবিত হয়েছে বিএনপি।
তার নেতৃত্বেই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামে নামে বিএনপি। ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও ছিলো তারেক রহমানের অবদান। দলটির নেতাকর্মীরা তার দিকনির্দেশনাতেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে সর্বশক্তি নিয়ে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের পতনের পর নির্বাহী আদেশে মামলা প্রত্যাহারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে প্রস্তাব দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার না হওয়ায় নিজেকে মামলামুক্ত করতে আইনি পথই বেছে নেন তিনি। দেশের কোনো আদালতে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা না থাকায় প্রায় ১৭ বছর নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফিরছেন তারেক রহমান।




