তপ্ত দুপুর কিংবা তুমুল বৃষ্টি। কাজে অনড় থাকেন শ্রমজীবীরা। তারই ছাপ রাজধানীর নয়াপল্টনে। দুপুরের হটাৎ বৃষ্টিতেও সমাবেশস্থল ত্যাগ করেননি তারা। বরং স্লোগান জোরালো হয় আরও।
আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সমাবেশ সফল করতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নয়া পল্টনমুখী নেতাকর্মীরা। অর্থনীতির চাকা সচল রাখা পোশাক শ্রমিক থেকে শুরু করে নির্মাণ কিংবা পরিবহন। বাদ যায়নি কেউই। কয়েক ঘণ্টায় হয়ে উঠে লাখো মানুষের সমাবেশে। তাদের চাওয়া নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা ও নিয়মিত বেতন ভাতা।
দুপুর ২টায় শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। একে একে যোগ দেন শ্রমিকদলসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। বলেন, যেকোনো ন্যায্য দাবি আদায়ে শ্রমিকদের পাশে থাকবে বিএনপি। সেইসাথে শ্রম সংস্কার কমিশন কর্তৃক প্রস্তাবগুলো আগামী মে দিবসের আগে আইন করে বাস্তবায়ন করার দাবি জানান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণের জন্য, তাদের অধিকার আদায়ের জন্য তাদের জাতি, তাদের ভাষার ঊর্ধ্বে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। তাহলে আমরা কেন বিভিন্ন জেলার মানুষ, বিভিন্ন শিল্পের মানুষ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মানুষ, আমরা কেন ঐক্যবদ্ধ হতে পারি না?’
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা মিয়ানমারকে করিডোর দেয়ার সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করে বলেন, দেশ ঝুঁকিতে ফেলে কিছু করা হলে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করা হবে। রাজনৈতিক দল ও জনগণকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় এমন চুক্তি না করার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশের অস্তিত্ব নির্ভর করছে গণতন্ত্রের উত্তরণের উপরে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যাওয়ার উপরে।’
শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে জানান, করিডোর দেয়া না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ ও নির্বাচিত সরকার।
তারেক রহমান বলেন, ‘মানবিক করিডোরের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে জানায়নি। করিডোর দেয়া না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ ও নির্বাচিত সরকার। বিদেশিদের স্বার্থ রক্ষা নয়, আগে দেশের জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে।’
জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচন প্রয়োজন উল্লেখ করে জানান, সরকারের একটা অংশ সুপরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকামী মানুষের মধ্যে বিভেদের সৃষ্টি করছে।
তারেক রহমান বলেন, ‘সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাই। যাতে পরাজিত শক্তি পুনর্বাসিত হতে না পারে। জনগণের রাজনৈতিক অধিকার এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। শ্রমজীবীরা অধিকারের কথা কাউকে বলতে পারছে না। জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন। জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচন প্রয়োজন।’
কেবল সভা, সেমিনার, আলোচনা আর আনুষ্ঠানিকতায় তিন যুগ কেটে গেল আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের। মেহনতি মানুষের ন্যায্যতা আদায়ের সংগ্রাম এখনও আটকে আছে কর্তাব্যক্তিদের চেষ্টা আর সীমাবদ্ধতায়। শ্রমিক-মালিক এক হয়ে কবে গড়বে এ দেশ নতুন করে। সে প্রশ্ন রেখেই