খেজুরের রস পানে ‘খামখেয়ালিপনা’, বাড়াচ্ছে মৃত্যুঝুঁকি

অপোরিশোধিত খেজুরের কাঁচা রস বহন করতে পারে নিপাহ ভাইরাস | ছবি: এখন টিভি
0

খেজুরের কাঁচা রসের সুমিষ্ট স্বাদ পেতে শুধু মানুষই নয়, বাদুড়ও আকৃষ্ট হয়। বাদুড়ের লালা থেকেই ছড়ায় প্রাণঘাতী নিপাহ ভাইরাস, যা বাড়িয়ে দিচ্ছে মৃত্যুঝুঁকি। তবু, গ্রামাঞ্চলে এখনো অনেকেই ঝুঁকি উপেক্ষা করে নিয়মিত পান করছেন কাঁচা রস। ফলে এসব এলাকায় নিপাহ আক্রান্তের সংখ্যাও তুলনামূলকভাবে বেশি। এ অবস্থায় চিকিৎসকদের পরামর্শ, নিরাপত্তার স্বার্থে কাঁচা খেজুরের রস পান না করাই সর্বোত্তম।

ঋতুচক্রের হিসাবে শীত পুরোপুরি জেঁকে বসতে চাইছে। প্রকৃতিতে হিমেল আমেজ, সকালে কুয়াশা আর ঠাণ্ডা বাতাস। কুয়াশাচ্ছন্ন পথঘাটের পাশেই দেখা যাচ্ছে গাছিদের ব্যস্ততা।

প্রতিদিন সন্ধ্যার আগেই গাছের সঙ্গে রস সংগ্রহের হাঁড়ি বেঁধে দেন গাছিরা। সারারাত রস জমা হয় হাঁড়িতে। আর এই সুমিষ্ট রসের স্বাদ পেতে কখনো কখনো ছুটে আসে নিশাচর বাঁদুর। আর এই বাদুড়ের লালা থেকেই ছড়ায় নিপাহ ভাইরাস।

ভোরের আলো ফোটার আগে গাছিরা যখন রসের হাড়ি নামান, তখন এই সুমিষ্ট রসের সাথে লুকিয়ে থাকা মৃত্যুঝুঁকিও নীরবে পৌঁছে যায় মানুষের কাছে। বাদুড় বাহিত এ ভাইরাস থেকে বাঁচতে শহরে সচেতন অনেকেই রস পান করা প্রায় বন্ধ করলেও বহু গ্রামীণ মানুষের ধারণা—রস মানেই নিরাপদ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে একজন বলেন, ‘সকালবেলা খেজুরের রস থেতে বেশ ভালো লাগে। ঠান্ডা লাগে, তবুও আমরা খাই। ভাইরাসের ভ্যাপারে আমরা কিছু জানি না।’

আরও পড়ুন:

স্থানীয়দের দাবি, রস সংগ্রহের পর তা ছেকে নেয়া হয়, এতে আর ভাইরাস থাকে না। ভাইরাসকে খুব বেশি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন না তারা।

এক গাছি জানান, মানুষ ভাইরাস নিয়ে তেমন শঙ্কিত নয়। যত্ন করে রস সংগ্রহ করে মানুষের কাছে পৌঁছে দেন তিনি।

চিকিৎসকরা বলছেন, পরিষ্কার পাত্র ঢেকে ব্যবহার করলেও বাদুড়ের লালা বা স্পর্শে রস দূষিত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই কাঁচা রস একেবারেই না খাওয়ার পরামর্শ তাদের।

বগুড়ার সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগ মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মনির হোসেন বলেন, ‘চিকিৎসক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব তাদের সতর্ক করা, যেন খেজুরের কাঁচা রস এভাবে পান না করা হয়। ঢেকে রাখলেও বাদুড়ের লালা অনেকসময় রসের পাত্রের মধ্যে চলে যায়, তাই কাঁচা খেজুরের রস পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।’

এসএইচ