গতকাল (বুধবার, ১৮ জুন) দিবাগত রাতে জেলার চান্দিনা উপজেলায় আসামিদের নিকটাত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামের সোলাইমানের ছেলে আলাউদ্দিন (২১) ও তার ১৬ বছর বয়সী ছোট ভাই। নিহত কিশোরের নাম হোসাইন। সে একই গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে ও স্থানীয় শিকারপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই মাস আগে উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামের মইনুল হোসেনের মুদিদোকানে ৫০০ টাকা চুরির একটি ঘটনা ঘটে। এতে গ্রেপ্তার ১৬ বছর বয়সী কিশোর জড়িত থাকার অভিযোগ গ্রাম্য সালিসে প্রমাণিত হলে তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সালিসে গ্রাম্য মাতবরদের সঙ্গে হোসাইনের বাবা আবু তাহের উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি রায় দেয়ায় যুক্ত ছিলেন।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ৩১ মে গ্রেপ্তার কিশোর ও তার ভাই আলাউদ্দিন নিহত হোসাইনকে রাস্তা থেকে ধরে নির্জন স্থানে নিয়ে বিষ পান করান এবং তার অণ্ডকোষে অ্যাসিড ঢেলে ঝলসে দেন। এরপর থেকে হোসাইন কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল।
সবশেষ গতকাল বিকেলে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে নিহত হোসাইনের মা শাহিনা আক্তার বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় দুজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। পরে রাতে চান্দিনা উপজেলায় অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটের চিকিৎসক অরূপ কুমার রায় বলেন, ‘বিষক্রিয়ায় শিশুটির গলা ফুলে গিয়েছিল। যার কারণে সে শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। এছাড়া তার অণ্ডকোষ ঝলসে গিয়েছিল।’
নিহত কিশোরের বাবা আবু তাহের বলেন, ‘আমি খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমার ছেলেটা তো কোনো অন্যায় করেনি। তাকে কেন এভাবে হত্যা করা হলো।’
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন, ‘শিশু হোসাইন হত্যার ঘটনায় দুজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ গতকাল মধ্যরাতে চান্দিনা উপজেলায় আসামিদের মামার বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’