জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব যেন হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যাচ্ছে এ বর্ষা মৌসুমেও। থেমে থেমে বৃষ্টির মাঝেও সূর্যের তাপে হাসফাস জনজীবন। চিরচেনা বর্ষার রূপ যেন পালটে দিচ্ছে জলবায়ুর এ পরিবর্তন। ফলে শীত-গ্রীষ্ম মানছে না ডেঙ্গু।
আবহাওয়া অফিস বলছে, ব্রেক মনসুনের প্রভাবে দেশজুড়ে থেমে থেমে বৃষ্টি চলমান থাকলেও দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়াবিদ খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বর্ষার একটা ব্রেক থাকে, এখন সেই ব্রেকটা চলছে আরকি। আগামীকাল পর্যন্ত তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে। এর পর থেকে তাপমাত্রা অনেকটা কমে আসবে, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা বাড়বে।’
বৃষ্টিপাতের এই হেরফের এবং তাপমাত্রার এই পরিবর্তন দিন দিন বাড়াচ্ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। থেমে থেমে হওয়া বৃষ্টি স্বস্তি দিলেও এর ফলে জমে থাকা পানিতেই জন্ম নিচ্ছে এডিসের লার্ভা। এতে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের হার এবং মৃত্যু।
আরও পড়ুন:
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু ছাড়িয়েছে একশো। চিকিৎসকরা বলছেন, সামনে শুষ্ক মৌসুমেও বৃষ্টিপাতের এই ধারা অব্যাহত থাকলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়বে তাই প্রয়োজন পর্যাপ্ত প্রস্তুতি।
ডিএনসিসি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আসিফ হায়দার বলেন, ‘এডিস মশা আসলে প্রজননের জন্য পানি, উষ্ণতা এবং আদ্রতার প্রয়োজন। বর্তমানে আমাদের এখানে বর্ষা সিজনে যেরকম দেখা যাচ্ছে যে, থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে এবং সঙ্গে আদ্র ও উষ্ণ আবহাওয়া। এ আবহাওয়া এডিস মশার প্রজননের জন্য আদর্শ। সামনে এটা আরও বাড়বে এবং আমাদের এখন থেকেই বাড়তে পারে।’
গবেষকরা বলছেন, জলবায়ুর এ পরিবর্তন বর্ষাকালকে এমন এক পরিস্থিতিতে নিয়ে গিয়েছে যেখানে মশার দ্রুত বিস্তার এবং ভাইরাস সংক্রমণ সহজ হয়। তাই জুলাইয়ের তুলনায় আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়বে দুই থেকে তিনগুণ।
কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জায়গাতেই এই মাসে, বিশেষ করে আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু জুলাইয়ের তুলনায় দ্বিগুণ অথবা তিনগুণ হতে পারে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ রোগটি আরও বাড়বে, কারণ জমা পানিতে এডিসের প্রজনন বৃদ্ধি পাবে।’
ডেঙ্গু বিস্তার রোধে মশা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি স্থানীয় সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।