ভারতের অপারেশন সিন্দুরের ৩দিন পর, পাকিস্তানের অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস-এর মধ্য দিয়ে দুই পরাশক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘাত উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে। অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রের আধিপত্য দেখাচ্ছে উভয় পক্ষের সেনারা।
এভাবে চলতে থাকলে চার সপ্তাহে পাকিস্তান-ভারত সংঘাতের মূল্য ৫০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অর্থনৈতিক ক্ষতি ছাড়াও বিমান হামলা, ব্যাপক ড্রোন মোতায়েন এবং যুদ্ধ প্রস্তুতির সম্ভাব্য ব্যয়ের হিসেব-নিকেশে এমন খবর প্রকাশ করেছে জিও নিউজসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রতিটি বিমানের আনুমানিক জ্বালানি এবং পরিচালনা খরচ প্রায় ৮০ হাজার ডলার। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০টি বিমান উড্ডয়নের হারে অস্ত্রের খরচ এক লাখ ডলার থেকে ১১ লাখ ডলার পর্যন্ত হতে পারে। এতে চার সপ্তাহে টেকসই বিমান হামলার মোট খরচ দাঁড়াতে পারে প্রায় ৬০০ কোটি ডলারে।
আরো পড়ুন:
স্যাটেলাইট ব্যান্ডউইথ, গ্রাউন্ড কন্ট্রোল স্টেশন এবং জ্যামিং ক্ষমতা বিবেচনা করলে, প্রতিদিন আনুমানিক খরচ ১০ কোটি ডলারে পৌঁছাতে পারে। চার সপ্তাহে যা ঠেকতে পারে প্রায় ৩০ লাখ ডলার। এছাড়াও ব্যালিস্টিকসহ বিভিন্ন মডেলের ক্ষেপণাস্ত্রে প্রতিদিন আনুমানিক ব্যয় হবে ১৫ কোটি ডলার। চার সপ্তাহে যা ৪৫০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। অন্যদিকে সৈন্য সমাবেশ এবং জ্বালানি খরচ প্রতিদিন চার কোটি ডলার ধারণা করা হয়। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০সহ অন্যান্য বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রক্ষণাবেক্ষণে প্রতিদিন আরও দুই কোটি ডলার যোগ হয়।
প্রতিবেদনে পাকিস্তানের সংঘাত ব্যয় ধারণায় বলা হয়, বিমান হামলা এবং টেকসই যুদ্ধ বিমান টহলের প্রতিদিন সম্মিলিত খরচ আনুমানিক আড়াই কোটি ডলারেরও বেশি। চার সপ্তাহে যা দাঁড়াবে ১০০ কোটি ডলার। রা'দ ক্রুজ মিসাইল, হাতফ এর মতো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং তুরস্কের তৈরি বায়রাক্টার ড্রোন মোতায়েনের কথা বিবেচনা করে অতিরিক্ত ৪৫ কোটি ডলার ব্যয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
এদিকে সামরিক ব্যয় ও সীমান্ত উত্তেজনায় ভারতের জিডিপিতে ১৫ হাজার কোটি ডলার আর্থিক ক্ষতির শঙ্কা বিশ্লেষকদের। দ্বিতীয়ত, বাজার অস্থিরতা এবং মুদ্রার অবমূল্যায়নে নয় হাজার কোটি ডলার পর্যন্ত ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া বাণিজ্য ব্যাহত এবং সরবরাহ শৃঙ্খল ভেঙে যাওয়ার ফলে আট হাজার ডলার ক্ষতি এবং বিদেশি বিনিয়োগ প্রবাহ প্রায় ১০ হাজার কোটি ডলার কমার আভাস মিলছে।
অন্যদিকে সংঘাত উত্তেজনায় পাকিস্তানের পরোক্ষ অর্থনৈতিক প্রভাবও অনেক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থগিত অর্থনৈতিক কার্যকলাপ এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে দেশটির জিডিপি আড়াই হাজার ডলার ব্যাহত হওয়ার শঙ্কাও প্রকট। আর্থিক বাজারের অস্থিরতা এবং মুদ্রার অবমূল্যায়নে আনুমানিক ক্ষতি ধরা হয়েছে এক হাজার ৫০০ কোটি ডলার। বাণিজ্য ও সরবরাহ শৃঙ্খলে প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি ডলার ক্ষতিরও আশঙ্কা রয়েছে। এফডিআই প্রবাহ এবং আইএমএফ-সম্পর্কিত ক্ষতি হতে পারে ৫০০ কোটি ডলার।