ইউক্রেনে বন্ধ মার্কিন অস্ত্র সরবারহ: বাড়ছে রুশ আতঙ্ক

অস্ত্র সরবারহ বন্ধের পর ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন বাড়ার শঙ্কা জানিয়েছে কিয়েভ
অস্ত্র সরবারহ বন্ধের পর ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন বাড়ার শঙ্কা জানিয়েছে কিয়েভ | ছবি: সংগৃহীত
0

ইউক্রেনে মার্কিন অস্ত্র সরবারহ বন্ধ ঘোষণার পরই কিয়েভজুড়ে বাড়ছে রুশ আতঙ্ক। যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র সরবারহ বন্ধের পর ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন বাড়ার শঙ্কা জানিয়েছে কিয়েভ। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের ফলে চার বছর ধরে চলা রুশ ইউক্রেন যুদ্ধ শান্তিচুক্তিতে পৌঁছানোর পরিবর্তে আরও বেশি দীর্ঘায়িত হবে বলেও ধারণা দেশটির। তবে মস্কো বলছে যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তের ফলে দ্রুত বন্ধ হবে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ। সামনের দিনগুলোতে রাশিয়া আরও বেশি আগ্রাসী হয়ে উঠতে পারে বলে শঙ্কা জানিয়েছে কিয়েভ।

তবে আবারও অস্ত্র সহায়তা চালুর জন্য ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রুশ ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনকে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার অস্ত্র সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

তবে এবার মার্কিন স্বার্থ রক্ষায় ইউক্রেনে এ সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানায় হোয়াইট হাউস। কেননা, ট্রাম্পের উচ্চ শুল্কনীতি ও বিগ বিউটিফুল বিলের প্রভাবে গত কয়েক মাস ধরেই মার্কিন অর্থনীতিতে বেহাল দশা দেখা দিয়েছে। তাদের মুদ্রা বাজারে একরকম ধস নেমেছে। মূলধন হারাচ্ছে শেয়ার বাজার।

এ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্র তাদের মিলিয়ন ডলারে অত্যাধুনিক সব অস্ত্র প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র, হাউতজার, গ্রেনেড লঞ্চার দেয়া বন্ধ করেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। একই সঙ্গে ইউক্রেনকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও পাঠাবে না তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে রাশিয়া। রুশ প্রতিরক্ষা দপ্তর ক্রেমলিন বলছে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে অস্ত্র না পাঠালে দ্রুত যুদ্ধ বন্ধ হতে পারে। ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, কিয়েভের কাছে অস্ত্র না থাকলে সামরিক লড়াই দ্রুত বন্ধ হবে।

অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের ঘোর সমালোচনা করেছে ইউক্রেন। কারণ হিসেবে বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের ওপর ভর করেই রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন। এই সময়ে এসে গাছে উঠিয়ে মই কেঁড়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। কিয়েভ আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ছাড়া মস্কোর সেনাদের সঙ্গে লড়াই কোনভাবেই সম্ভব নয়।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র যেন পুনরায় ইউক্রেনকে অস্ত্র পাঠায় সেজন্য ওয়াশিংটনের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে জানান ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে যোগযোগ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউক্রেনের সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা চলছে। ইউক্রেনে অস্ত্র সরবারহ বাড়াতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। যেভাবেই হোক ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

এ পরিস্থিতিতেও আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে ইউক্রেনীয় ও রুশ সেনারা। বুধবার (২ জুলাই) ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ লুহানস্ক অঞ্চল দখলের দাবি করে মস্কো।

ইএ