ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এতেই যেন ইউক্রেনীয়দের মধ্যে ফিরেছে স্বস্তি। কিয়েভের বাসিন্দাদের আশা, যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের মাধ্যমে পরিবর্তিত হবে যুদ্ধের গতিপথ।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘আমাদের আকাশে শত্রুর মিসাইল ও ড্রোন উড়ছে। তাদের জবাব দিতে আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন। শেষ পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়ে যাবো।’
আরেকজন বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। ট্রাম্প তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলে আমাদের জন্য সত্যিই দারুণ হবে।’
জার্মানি বলছে, ইউক্রেনকে প্যাট্রিয়ট মিসাইল বিক্রির ক্ষেত্রে ইতিবাচক সংকেত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিয়েভের জন্য আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি কিনতে আগ্রহী বার্লিন। এ লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছেন জার্মান চ্যান্সেলর।
জার্মানির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মুখপাত্র কর্নেল মিটকো মুলার বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিষয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত পেয়েছি। গেলো শুক্রবার চ্যান্সেলর ২টি প্যাট্রিয়ট কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে। আশা করছি, শীঘ্রই সুসংবাদ দিতে পারবো।’
এদিকে মস্কোর দাবি, কিয়েভকে অস্ত্র সরবরাহ কখনোই বন্ধ করেনি ওয়াশিংটন। সাড়ে ৩ বছরের যুদ্ধে অস্ত্র সরবরাহ সবসময়ই অব্যাহত রাখা হয়েছে। এখন ইউরোপের নামে অস্ত্র পাঠানোর পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ বলেন, ‘প্যাট্রিয়টের উচ্চমূল্য নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। এখন সম্ভবত ইউরোপ এই অস্ত্রের মূল্য পরিশোধ করবে। কিন্তু মোদ্দাকথা ইউক্রেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত ছিল। এখনো অব্যাহত রয়েছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্টের অস্ত্র সরবরাহের প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বজুড়ে আবারও আলোচনায় প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। এমআইএম- ১০৪ প্যাট্রিয়ট সার্ফেস টু এয়ার মিসাইলটি তৈরি করেছে মার্কিন অস্ত্র নির্মাতা রাইথন টেকনোলজিস। ১৯৮০ এর দশকে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রভাণ্ডারে যুক্ত করা হয় শক্তিশালী এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ৪ দশক পরেও আস্থার প্রতিদান দিয়ে আসছে প্যাট্রিয়ট।
সার্ফেস টু এয়ার মিসাইলটির প্রতিটি ব্যাটারিতে থাকে রাডার, কন্ট্রোল সিস্টেম, পাওয়ার ইউনিট, লঞ্চার ও সাপোর্ট সিস্টেম। সিস্টেমটির ইন্টারসেপ্টরগুলো ১৫০ কিলোমিটারের মধ্যে ক্রুজ মিসাইল, ব্যালিস্টিক মিসাইল এমনকি এয়ারক্রাফট প্রতিহত করার ক্ষেত্রে কার্যকরী।
রাইথনের ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, এ পর্যন্ত বিশ্বের ১৯টি দেশের কাছে ২৪০টির বেশি প্যাট্রিয়টের ইউনিট সরবরাহ করা হয়েছে। গবেষণা সংস্থা সিএসআইএসের তথ্যমতে, একটি প্যাট্রিয়টের ব্যাটারির খরচ ১০০ কোটি ডলারের বেশি। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় পশ্চিমাদের কাছে বারবার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমটি সরবরাহের অনুরোধ জানিয়ে আসছে কিয়েভ।





