বেতন বৃদ্ধির দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন ব্রিটেনের আবাসিক চিকিৎসকরা। প্ল্যাকার্ড হাতে ডাক্তারদের স্লোগানে উত্তাপ ছড়াচ্ছে পুরো দেশে।
২০২৪ সালে লেবার পার্টি ক্ষমতায় এসে ডাক্তারদের দাবি অনুযায়ী ২২ শতাংশ বেতন বাড়ানোর বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছালেও এক বছরেও তা পূরণে ব্যর্থ হয় প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার প্রশাসন। এরপর আর্থিক সংকটের অজুহাতে সম্প্রতি ৫.৪ শতাংশের বেশি বেতন বাড়ানো সম্ভব না বলে জানায় সরকার। এতেই সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব দেখা দেয় ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের। যার জেরে শুক্রবার সকাল থেকে ৫ দিনের ধর্মঘট শুরু করেছেন আবাসিক চিকিৎসকরা।
প্রতি ঘণ্টায় ২২ পাউন্ড বেতন চাওয়া অযৌক্তিক না হলেও, তা পূরণে সরকার গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ আন্দোলনরত চিকিৎসকদের। ঠিকমতো মূল্যায়ন না করায় এরইমধ্যে অনেক দক্ষ চিকিৎসক ভিনদেশে পাড়ি জমিয়েছেন বলে জানান তারা। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় ব্রিটেনের চিকিৎসা ব্যবস্থা হুমকিতে পরবে বলেও দাবি তাদের।
আন্দোলনরত চিকিৎসকদের একজন বলেন, ‘আমার প্রতিভাবান সহকর্মীরা অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তারা মেলবোর্ন, ব্রিসবেন, সিডনিতে বেশি বেতন পাচ্ছেন এবং কাজের পরিবেশও উন্নত। আমরা যদি বিশ্বের মধ্যে প্রথম শ্রেণীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চাই তাহলে ডাক্তারদের বেতন বাড়াতে হবে।’
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে ২৬ হাজারের বেশি রেসিডেন্ট ডাক্তার ধর্মঘটের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। বেতন বৃদ্ধির দাবিতে তাদের পূর্ণ কর্মবিরতি চলবে বুধবার পর্যন্ত। এতে দেশটির স্বাস্থ্য পরিষেবায় ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, উন্নত স্বাস্থ্যখাত নিশ্চিতে আন্দোলনে নামা ছাড়া তাদের উপায় ছিল না।
আরেকজন বলেন, ‘আমিও মনে করি ধর্মঘট রোগীদের চিকিৎসায় প্রভাব ফেলবে। তবে দুর্ভাগ্যবশত এটি করতে হচ্ছে। যদি বেতন না বাড়ে এবং কাজের পরিবেশ উন্নত না হয় তাহলে ডাক্তার হিসেবে আমরা আর কী করতে পারি। এর সঙ্গে রোগীদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতের বিষয়টিও জড়িত। এসব দিক ভেবেই আমরা ধর্মঘটে নেমেছি।’
আবাসিক ডাক্তারদের ধর্মঘটে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে কিয়ার স্টারমার প্রশাসন। ধর্মঘটের সিদ্ধান্তকে বেপরোয়া এবং অপ্রয়োজনীয় বলছেন - ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এর আগে তিন বছরে ডাক্তারদের বেতন প্রায় ২৯ শতাংশ বেড়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওয়েস স্ট্রিটিং বলেন, ‘ধর্মঘটের কারণে আগামী পাঁচ দিনে আমাদের চিকিৎসা সেবা পরিচালনা করা চ্যালেঞ্জের হবে। এ কারণে প্রধানমন্ত্রী এবং আমিসহ রোগী ও অন্যান্যরা ক্ষুব্ধ। আমি বলবো বিএমএ বেপরোয়া এবং অপ্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।’
প্রায় ৫ হাজার প্রাপ্তবয়স্কের উপর পরিচালিত এক জরিপের তথ্য বলছে, ৫২ শতাংশই ধর্মঘটের বিরোধিতা করছেন। আর ৩৪ শতাংশের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন।