একদিকে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্য উত্তেজনা। এর মধ্যে সম্প্রতি কাতারে হামলা চালিয়ে আগুনে ঘি ঢেলেছে ইসরাইল। যার কারণে নিরাপত্তা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন উপসাগরীয় দেশগুলো। অন্যদিকে চলতি বছর এপ্রিল মাসে পেহেলগামে প্রাণঘাতি হামলার ঘটনার জেরে মে মাসে চার দিনের সংঘাত দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বৈরীতা চরম পর্যায় নিয়ে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে নিজ দেশের নিরাপত্তা জোরদার ও আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ হলো সৌদিআরব ও পাকিস্তান। কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি সই করলেন শেহবাজ শরীফ ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এর আওতায় পাকিস্তান কিংবা সৌদি আরব যে দেশই আক্রমণের শিকার হোক না কেন, সেই আক্রমণকে দুই দেশের ওপরই আগ্রাসন হিসেবে দেখবে রিয়াদ ও ইসলামাবাদ। যা দুই মিত্র দেশের মধ্যে চলমান প্রায় আট দশকের পুরনো সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার বার্তা দিচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।
আরও পড়ুন:
সিডনি ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির দক্ষিণ এশিয়া নিরাপত্তা গবেষক মুহাম্মদ ফয়সাল মনে করছেন, এ চুক্তি পাকিস্তানের জন্য একটি ‘টেমপ্লেট’ হিসেবে কাজ করতে পারে। যা ভবিষ্যতে দেশটিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারের মতো উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গেও প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় যুক্ত হওয়ার সুযোগ দেবে।
সৌদি আরব-পাকিস্তানের মধ্যে হওয়া চুক্তির ফলে ভারত-পাকিস্তানের ভবিষ্যতের গতি-প্রকৃতি আরও জটিল হয়ে উঠবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। এমনকি চুক্তিটিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কূটনৈতিক ব্যর্থতা হিসেবেও অভিহিত করেছে ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেস। কারণ সৌদি আরবের মতো দেশগুলো যেন পাকিস্তান থেকে দূরে থাকে তার জন্য বহু আগে থেকেই তৎপর ভারত। এপ্রিলে নরেন্দ্র মোদির সৌদি আরব সফর থেকেও সেই আভাস মিলেছিলো। তবে মোদি প্রশাসন বলছে, চুক্তি সম্পর্কে আগে থেকেই অবগত তারা।
এদিকে চুক্তির ফলে বৈশ্বিক উত্তেজনা পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এই যেমন, সৌদি আরবের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে পাকিস্তানের। একইভাবে পাকিস্তানের চির শত্রু ভারতের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়তে পারে সৌদি আরব।





