ইরান ও ইসরাইলের ১২ দিনের যুদ্ধের মূলে ছিল ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো। সেগুলো ধ্বংস করাই ছিল ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম লক্ষ্য। সেই উদ্দেশে দেশটির নাতাঞ্জ ও ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রে বাঙ্কার ব্লাস্টার দিয়ে হামলাও চালাও যুক্তরাষ্ট্র। তবে ইরানের দাবি মার্কিন হামলায় তাদের তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি ইরানের পারমাণবিক বোমা তৈরির সক্ষমতা দুই বছর পিছিয়ে দিয়েছে তারা। অবশ্য ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টাপাল্টি দাবির পক্ষে-বিপক্ষে স্পষ্ট কোনো প্রমাণ তুলে ধরেনি কোনো দেশই।
তবে সেসময় ইরানে অবস্থানরত আইএইএ'র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে তেহরান। ইরানের কঠিন সমালোচনার মুখে পড়ে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থাটি। যার অন্যতম কারণ তেহরানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল হামলা চালালেও এর নিন্দা জানায়নি জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থাটি। এছাড়াও ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ শুরুর এক দিন আগে ইরানের বিরুদ্ধে আইএইএ অভিযোগ তোলে, তেহরান পারমাণবিক বিধি-নিষেধ মেনে চলছে না।
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে গত বুধবার (২ জুলাই) আইএইএর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেসকিয়ান। সংস্থাটিকে কোনো ধরনের সহযোগতি করবে না বলেও সিদ্ধান্ত জানান তিনি। এরমধ্যেই তার এই প্রস্তাব ইরানের পার্লামেন্টে পাস হয়েছে। ইরানের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এ সিদ্ধান্ত বলে জানান দেশটির গার্ডিয়ান কাউন্সিলের স্পিকার। যদিও ইরানের এ সিদ্ধান্তকে অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস।
ইরানের এ সিদ্ধান্তের পর তেহরান ছেড়েছে আইএইএর সদস্যরা। শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেয়া এ পোস্টে এ কথা জানায় সংস্থাটি। এর সদস্যরা আইএইএর সদর দপ্তর অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা গেছে বলে পোস্টে উল্লেখ করে। সংস্থাটির ডিরেক্টর জেনারেল রাফায়েল গ্রোসি জানান, ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে শিগগিরই পুনরায় আলোচনা শুরু হবে।
তবে এ নিয়ে আলজাজিরা জানায়, আইএইএর সব সদস্য তেহরান ছেড়েছেন না কি কিছু সদস্য? বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। এমনকি যারা ইরান ছেড়েছেন তারাও সরাসরি ইরান থেকে ভিয়েনায় যাননি। শুরুতে স্থল পথে আর্মেনিয়া সীমান্ত পার হন। পরে সেখান থেকে বিমানে করে ভিয়েনায় পাড়ি জমান।