চার মাস পর দেশের মাটিতে খালেদা জিয়া

বিমানবন্দর থেকে যাচ্ছেন ফিরোজায়

চার মাস পর দেশের মাটিতে পা রাখলেন খালেদা জিয়া
চার মাস পর দেশের মাটিতে পা রাখলেন খালেদা জিয়া | ছবি: সংগৃহীত
0

লন্ডনে চিকিৎসা শেষে ৪ মাস পর দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। আজ (মঙ্গলবার, ৬ মে) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের দিকে ঢাকায় পৌঁছেন তিনি। বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজার’ উদ্দেশে রওনা হবেন খালেদা জিয়া। বিএনপি চেয়ারপারসনকে স্বাগত জানাতে সকাল থেকেই বিমানবন্দরে দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ঢল নেমেছে। জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে পথে পথে নেত্রীর অপেক্ষায় নেতাকর্মীরা।

বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দলীয় ও জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তার দুই পাশে অবস্থান নিচ্ছেন এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন। তার আগমন উপলক্ষে বিমানবন্দর এলাকায় অতিরিক্ত ভিড়ের আশঙ্কায় ট্রাফিক পুলিশও বাড়তি প্রস্তুতি নিয়েছে।

বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টা ৫ মিনিটে দেশের উদ্দেশে দোহা বিমান বন্দর ছাড়েন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এর আগে দেশের উদ্দেশে লন্ডন ছাড়েন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

সোমবার (৫ মে) বাংলাদেশ সময় রাত আনুমানিক ৯টা ৩৫ মিনিটে দেশের উদ্দেশে যাত্রা করেন তিনি। এর আগে লন্ডনের বাসা থেকে হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। বাংলাদেশ সময় ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে হিথ্রো বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন খালেদা জিয়া। পরে তারেক রহমান মাকে বিদায় জানান।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে আছেন দুই পুত্রবধূ শামেলা রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমানসহ ১৫ জন। ডা. জুবাইদা রহমানও ১৭ বছর পর দেশের মাটিতে ফিরলেন। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর স্বামী তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন জুবাইদা। এরপর দীর্ঘ সময় দেশে ফিরতে পারেননি তিনি।

দলীয় সূত্র জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি অবস্থান করবে বিমানবন্দর থেকে লো মেরিডিয়েন হোটেল পর্যন্ত এলাকায়। ছাত্রদল অবস্থান করবে লো মেরিডিয়েন হোটেল থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত এলাকায়। যুবদল অবস্থান করবে খিলক্ষেত থেকে হোটেল র‍্যাডিসন পর্যন্ত এলাকায়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি অবস্থান করবে হোটেল র‍্যাডিসন থেকে আর্মি স্টেডিয়াম পর্যন্ত এলাকায়। স্বেচ্ছাসেবক দল অবস্থান করবে আর্মি স্টেডিয়াম থেকে বনানী কবরস্থান পর্যন্ত এলাকায়। কৃষক দল অবস্থান করবে বনানী কবরস্থান থেকে কাকলী মোড় পর্যন্ত এলাকায়। শ্রমিক দল অবস্থান করবে কাকলী মোড় থেকে বনানীর শেরাটন হোটেল পর্যন্ত এলাকায়। ওলামা দল, তাঁতী দল, জাসাস, মৎস্যজীবী দল অবস্থান করবে শেরাটন হোটেল থেকে বনানী কাঁচাবাজার পর্যন্ত এলাকায়। পেশাজীবী সংগঠনগুলো অবস্থান করবে বনানী কাঁচাবাজার থেকে গুলশান-২ পর্যন্ত এলাকায়। মহিলা দল অবস্থান করবে গুলশান-২ নম্বর গোলচত্বর থেকে গুলশান অ্যাভিনিউ রোড পর্যন্ত এলাকায়।

এদিকে খালেদা জিয়া এবং তার দুই পুত্রবধূকে বরণে এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিএনপি। অঙ্গ সংগঠনগুলোকে ১১টি স্পটে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’ পর্যন্ত নেতাকর্মীরা রাস্তার দুই ধারে সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন।

গুলশানে খালেদা জিয়ার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’র ভেতরের কক্ষগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজও শেষ হয়েছে। সামনের সবুজ আঙিনায় ফুলগাছের টব দিয়ে সাজানো হয়েছে।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ওয়াসা, বাসার আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সাজসজ্জা কোনো কিছুই বাদ নেই। ম্যাডামের স্বজনরা সব কিছু তদারকি করেছেন।

এ ছাড়া জুবাইদা রহমান দেশে ফিরে প্রথমত শাশুড়ির সঙ্গে গুলশানে তার বাসা ফিরোজায় যাবেন। পরে তিনি ধানমণ্ডিতে তার পৈতৃক বাসভবন ‘মাহবুব ভবন’-এ থাকবেন। সাবেক নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের বাসা ধানমণ্ডির ৫ নম্বর সড়কে এই ‘মাহবুব ভবন’। এখানে এখন তার সহধর্মিণী সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু এবং বড় মেয়ে শাহীনা জামান ও তার পরিবার বসবাস করেন। বয়োবৃদ্ধ সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু কয়েক দিন আগে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ছোট মেয়ে জুবাইদা রহমান ঢাকায় এসে বাবার বাসায় উঠবেন বলে বাসার নিরাপত্তা ও সাজসজ্জা করা হয়েছে।

এনএইচ