শহর থেকে গ্রাম হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক, বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্যেই

প্রকাশ্যে চলছে মাদক বিক্রি ও সেবন
প্রকাশ্যে চলছে মাদক বিক্রি ও সেবন | ছবি: এখন টিভি
0

আইনশৃঙ্খলা-রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের পরও কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না মাদকের বিস্তার। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় মিলছে মাদক, প্রকাশ্যে বিক্রির কারণে দিন দিন মাদকসেবী বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। এদিকে পুলিশ বলছে, সব ধরনের মাদকের বিরুদ্ধে চলছে অভিযান ও নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা।

মাদক কেড়ে নেয় জীবনীশক্তি। যা সেবনের প্রথম ধাপ ধূমপান। ঢাকা শহরের পথে পথে আলো আছে, আছে অন্ধকারও। সেই অন্ধকার পথে গেল ২ যুগে প্রাণঘাতী সব মাদকের বিস্তার ঘটেছে সবচেয়ে বেশি।

যে কারণে অলিগলি থেকে পাড়া মহল্লা, বস্তি থেকে গগনচুম্বী অট্টালিকা সব খানে এখন সহজলভ্য মাদক। যার ভয়াল আগ্রাসনে পিতার হাতে খুন হচ্ছে সন্তান, ভাইয়ের হাতে ভাই, আবার কখনো মা তার আদরের সন্তানকে তুলে দিচ্ছে নিরাময় কেন্দ্রে বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর হাতে। যে কারণে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সামাজিক অস্থিরতা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার তিন নেতার মাজারের পাশে, চানখাঁরপুল সড়ক এলাকায় রীতিমতো মাদক সেবনের মহোৎসব চলছে। মাদকসেবীরা বলছেন কোনোভাবেই এ থেকে বেরোতে পারছেন না তারা। মাদকসেবীদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো বলছে, রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ের কারণে মাদকের বিস্তার থামানো যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন:

মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার সভাপতি অধ্যাপক ডা. অরুপ রতন চৌধুরী বলেন, ‘পারিবারিকভাবে যে শিক্ষাটা হওয়ার দরকার ছিল সেটা এখন নেই। ৫০ শতাংশের ওপর মানুষ এখন বাংলাদেশে কোনো না কোনো কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছেন। যারা মাদকাসক্ত তাদের ৮০ শতাংশই তরুণ। সব মিলিয়ে মাদকাসক্ত প্রায় ২ কোটির মতো। দেড় কোটি নিয়মিত নিচ্ছে ৫০ লাখ অনিয়মিত নিচ্ছে। এখন যারা রক্ষক তারাই ভক্ষক হয়ে যাচ্ছেন।’

পুলিশ বলছে, মাদক ব্যবসায়ীরা আগের তুলনায় অনেক সঙ্ঘবদ্ধ ও কৌশলী। তাই সহজে তাদের ধরা যায় না। তারপরও তারা মাদক নির্মূলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ডিএমপির মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ‘পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিও ছুঁড়ছে। এ সময় আমাদের অনেকসময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। সাম্প্রতিক কয়েকটা ঘটনায় সেটা দেখা গেছে। এসব ঝুঁকি নিয়েই আমরা কাজ করছি। এক্ষেত্রে আমাদের সফলতাও কিন্তু কম না। সাম্প্রতিক সময়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ইয়াবা এবং গাঁজা উদ্ধার করেছি আমরা।’

দেশে প্রায় ২৮ ধরনের মাদক প্রচলিত। আন্তর্জাতিক মাদক রুট গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল ও গোল্ডেন ক্রিসেন্টের কাছাকাছি হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই মাদকের ঝুঁকিতে থাকে বাংলাদেশ। তাছাড়া দেশের ৩২টি সীমান্তবর্তী জেলার বেশ কয়েকটি অরক্ষিত। ফলে শহর থেকে গ্রাম, হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক।

ইএ