নারায়ণগঞ্জে দেশের প্রথম জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন

নারায়ণগঞ্জে নির্মিত প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন
নারায়ণগঞ্জে নির্মিত প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন | ছবি: এখন টিভি
4

বৈষম্যবিরোধী জুলাই আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে নারায়ণগঞ্জে নির্মিত ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ (সোমবার, ১৪ জুলাই) বিকালে নগরীর হাজীগঞ্জ এলাকায় স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের পাঁচ উপদেষ্টা। জুলাই যোদ্ধাদের স্মরণে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন করা হলো নারায়ণগঞ্জে। দেশের আরও কয়েকটি জেলায় জুলাই যোদ্ধাদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করবে সরকার।

জুলাই আন্দোলনে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল; শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; শিক্ষা উপদেষ্টা ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার; বন পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খাঁন।

অনুষ্ঠানে আসিফ নজরুল বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই জুলাই আন্দোলনের হত্যা মামলার বিচার শেষ হবে। বিচার পূর্ণ গতিতে এগিয়ে চলেছে। কোনো গাফিলতি হবে না।‘

তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে আমরা কেন বিজয়ী হয়েছিলাম? কারণ ফ্যাসিস্টকে বাদ দিয়ে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম। আমাদের ওই ঐক্য ধরে রাখতে হবে। ঐক্য অটুট থাকলে আমরা সামনেও বিজয়ী হবো।’

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এবার আমরা কেন বিজয়ী হয়েছিলাম? নির্ভীকভাবে মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েছিল ছাত্ররা। সেদিন যদি এভাবে তারা না দাঁড়াতো তবে ৫ আগস্ট আসতো না। ফলে তাদের স্মরণে রাখতে হবে। তাদের আত্মবিসর্জনকে সম্মান দিয়ে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যেতে হবে। দেশ গড়ার সংগ্রামে সবাই সজাগ ও সতর্ক থাকবেন।’

আদিলুর রহমান খাঁন বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী পুঁজিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বহু গুম হয়েছে। অনেক আয়নাঘর তৈরি হয়েছে। সেই লম্বা সময়ের একটা সময় বাংলাদেশের তরুণ ও ছাত্ররা বৈষম্যের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে আসে। এ সরকার গণঅভ্যুত্থানের পথ আসার সরকার। বাংলাদেশে যাতে আর কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি দাঁড়াতে না পারে এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। যদি ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার চেষ্টা করে তা দমন করা হবে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা, পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা ও মহানগর জামাতের সাবেক আমির এবং কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা মাঈনউদ্দিন, মহানগরের বর্তমান আমির মাওলানা আব্দুল জব্বার।

আরো উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জের সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, ছাত্র ফেডারেশনের জেলার সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা, জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির দক্ষিণ অঞ্চলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ শওকত আলী, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক নীরব রায়হানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা। পরে জুলাই আন্দোলনে শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জে ৫৬ জন শহীদ ও সাড়ে তিনশ’ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের ২১ জনের নাম উল্লেখ করা হয় স্মৃতিস্তম্ভের মধ্যে। তারা হলেন-রিয়া গোপ, মো. রোমান, আরমান মোল্লা, মো. ইরফান ভূইয়া, মো. তুহিন, মো. মোহসীন, মো. জনি, ইব্রাহিম, মো. স্বজন, মো. আদিল, পারভেজ হাওলাদার, মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়া, সোলেমান, ইমরান হাসান, হযরত বিল্লাল, সফিকুল, মো. সজল, মো. মাবরুর হুসাইন, মোহাম্মদ মাহামুদুর রহমান খান, মোহাম্মদ সাইফুল হাসান, আহসান কবির।

এএইচ