পঞ্চগড়ের হাফিজাবাদ ইউনিয়নের সর্দারপাড়া এলাকার গৃহবধূ ফাতেমা আক্তার। অভাবী এই নারী, মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন। প্রথম দফায় চার হাজার আটশো টাকা পান তিনি। তারপর বছর পেরুলেও আর টাকা পাচ্ছেন না মোবাইল ব্যাংকিং নাম্বারে। পরে জানা যায় তার নামে বরাদ্দের টাকা তুলছেন অন্য কেউ।
ভুক্তভোগী নারী ফাতেমা জানান, প্রথমে টাকা পেলেও অনেক দিন ধরে টাকা পাচ্ছেন না তিনি। উনার নামে বরাদ্দ টাকা অন্য কেউ উঠিয়ে নিচ্ছে অভিযোগ করে তিনি এর বিচার দাবি করেন।
শুধু ফাতেমা নন, জেলার অন্তত ৬০০ অসহায় দরিদ্র মা ভাতা পাচ্ছেন না বছর ধরে। যার সিংহভাগই সদরের। তাদের প্রত্যেকের মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসে দেয়া নাম্বারের পরিবর্তে অন্য নাম্বার দিয়ে তুলে নেয়া হয়েছে বিরাট অঙ্কের টাকা।
ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীরা জানান, অনেক দিন ধরে টাকা না পাওয়ায় খোঁজ নিয়ে তারা জানতে পারেন তাদের নামের টাকা অন্য নাম্বার থেকে কেউ তুলে নিচ্ছে। কিন্তু কে বা কারা এ কাজ করছে তা জানেন না কেউ। এ জালিয়াতির বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।
বিষয়টিকে কেউ বলছেন হ্যাকিং, কেউ বলছেন সরষেই রয়েছে ভূত। তবে চাঞ্চল্যকর এই বিষয়টি নিয়ে বিব্রত স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও। এবিষয়ে সরকারের দৃশ্যমান পদক্ষেপ ও জড়িতদের শাস্তি চান তারা
ইউপি সদস্য জানান, কোন দরকারি কাজ থাকলে আমি করতে পারি মেম্বার হিসেবে। কিন্তু একজনের টাকা তোলার তথ্য হ্যাকারের কাছে কিভাবে যায়।
হাড়িভাসার চেয়ারম্যান সাইয়েদ-নুর-ই- আলম বলেন, ‘মাতৃত্বকালীন ভাতা হিসেবে যে টাকাটা দেয়া হচ্ছে তা অনেকেই পাচ্ছে। কিন্তু মাঝে মাঝে অনেকেই এসে অভিযোগ করে যে তাদের টাকা পায়নি। যারা প্রতারক চক্র তাদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে এটাই আমাদের দাবি।’
ভুক্তভোগীদের তালিকা ধরে পুনরায় নাম্বার সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে বলে দাবি জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের।
পঞ্চগড় জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক একেএম ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘৬০০ জনের মোবাইল ব্যাংকিং নাম্বার হ্যাক হয়ে যায়। ঢাকা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে তারা আমাকে জানান এবং তারা অনলাইনে তালিকে প্রেরণ করে। ১ তারিখ আমি তালিকা পেয়ে ২ তারিখেই সকল ইউনিয়ন পরিষদে চিঠি প্রেরণ করি সংশোধনের জন্য।’
জেলা সদরের প্রতি ইউনিয়নে ৯ জন আর বাকি ৪ উপজেলার প্রতি ইউনিয়নে ৫ জন করে মা'কে প্রতি মাসে তালিকাভুক্ত করা হয় মা শিশু সহায়তায়। বিষয়টির স্থায়ী সমাধান চান তারা।